রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর [SSC বাংলা]

রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর: ‘রানার’ কবিতাটি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘ছাড়পত্র’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। কবিতাটি শ্রমজীবী মানুষ রানারদের নিয়ে লেখা।

মূলবক্তব্য: রানাররা এতটাই দায়িত্বশীল যে রাত হোক, দুর্গম পথ হোক, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া হোক মানুষের ব্যক্তিগত ও প্রয়োজনীয় চিঠি ঠিক সময়ে পৌছে দেয়। তাদের ক্লান্তি ও অবসর নেই। পেটে ক্ষুধার জ্বালা নিয়ে প্রিয়জনের নিকট খবর পৌঁছে দেয় রানার। এই পেশায় যারা নিয়োজিত তারা কতটা মহৎ সে ভাবনারই প্রতিফলন ঘটেছে কবিতায়।
ভাষা ও ছন্দ: ‘রানার’ কবিতাটি মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত। মূলপর্ব ৬ মাত্রার। অপূর্ণ পর্ব ২ মাত্রার। প্রতি চরণে সমতার বাঁধন নেই।

আজকের আর্টিকেলে SSC পরিক্ষায় কমন উপযোগী “রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর” শেয়ার করা হবে। কথা না বাড়িয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।


রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর ০১: বালক নোমান পিতৃহীন। সে মতিঝিলে অফিসপাড়ায় দশজনের কর্মস্থলে খাবার পৌঁছে দেয়। তারা বেশির ভাগই অফিসার খাবার খায়। নোমানের ভাগ্যে ভালো খাবার জোটে না কতদিন! তার ওপর মায়ের ওপর অভিমান করে রাতে খায়নি। শরীর তার আর চলতে চায় না। তবুও ছুটতে হচ্ছে। কারণ দেরি হলে সাহেবদের কষ্ট হবে।

ক. ‘দুর্বার’ শব্দের অর্থ কী?
খ. তাঁর জীবনের স্বপ্নের মতো পিছে সরে যায় বন’— বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
গ. ‘রানার’ কবিতার রানারের সাথে বালক নোমান চরিত্রের সাদৃশ্য ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘বালক নোমান রানারের কাছাকাছি তবে অপূর্ণ’- উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।

 

      রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর ১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক। ‘দুর্বার’ শব্দের অর্থ— যাকে নিবারণ করা যায় না।

খ। রানারের জীবন নিয়ে দেখা কোনো স্বপ্নই যে পূরণ হয়নি— এখানে সে কথাই বোঝানো হয়েছে।
সবার জীবনেই স্বপ্ন থাকে- কারোটা পূরণ হয় আবার কারোটা পূরণ হয় না। তেমনি স্বপ্ন ছিল রানারেরও। তবে সে স্বপ্ন পূরণ হওয়ার কোনো তথ্য আমাদের জানা নেই। তার সকল স্বপ্ন পেছনে চলে গেছে যেমন তার চলার পথ থেকে বন বনন্ত সরে যায় ক্রমশু। বন নানা গাছে সমৃদ্ধ থাকে তেমনি তার জীবনের স্বপ্নগুলোও হয়তো নানা শাখা-প্রশাখায় ভরপুর ছিল; কিন্তু পূরণ হয়নি কোনোটাই।

উত্তরের সারবস্তু: রানারের জীবন নিয়ে দেখা কোনো স্বপ্নই যে পুরণ হয়নি— এখানে সে কথাই বোঝানো হয়েছে।

গ। ‘রানার’ কবিতার ‘রানার ও উদ্দীপকের বালক নোমান উভয়েই কর্তব্যপরায়ণ এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের শক্তিতে শক্তিমান।
রানার কাঁধে বিশাল এক ডাকের বোঝা নিয়ে রাতের পথে ছুটে চলে। তার শরীর ক্লান্তিতে নুয়ে আসতে চায়। কিন্তু সে অবিচল। রাস্তার ভয়, বিপদ, প্রকৃতির বিরূপ ভাব কোনোটাই তার চলার গতিকে ঠেকিয়ে দিতে পারে না। তার অভাব আছে, বস্তায় টাকা আছে কিন্তু সে দায়িত্ববান ও সৎ। তার অধিকার নেই সে টাকায়। ক্লান্তি যত অসহ্যই হোক তাকে গ্রাহ্য করার সময় রানারের নেই।

আমরা যদি মিলিয়ে দেখি, নোমানকেও রানারের সার্থক প্রতিনিধি বলা যায়। নোমানের বাবা নেই এবং তার বয়স অল্প। বাধ্য হয়েই তাকে পেটের দায়ে বিশেষ দায়িত্ব ঘাড়ে নিতে হয়েছে। সে কিছুলোকের দুপুরের খাবার পৌঁছে দেয় তাদের কর্মস্থলে। দেরি করা চলে না; তাহলে সাহেবদের কাজের ক্ষতি হয়। তাকে এই বয়সেই খাবারের বোঝাটি ঘাড়ে বয়ে ছুটতে হয়। সময়নিষ্ঠা তাকে মেনে চলতে হয় কঠোরভাবে যেমনভাবে মেনে চলে রানার। মাথায় বাহারি খাবার, পেটে ক্ষুধার রাক্ষস; কিন্তু রানারের টাকার মতো তারও খাবার স্পর্শ করার অধিকার নেই। সে রানারের মতো সংযমী। এখানেই কবিতার বক্তব্যের সাথে নোমান চরিত্রের সাদৃশ্য।

উত্তরের সারবস্তু: ‘রানার’ কবিতার রানার ও উদ্দীপকের বালক নোমান উভয়েই কর্তব্যপরায়ণ এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের শক্তিতে শক্তিমান।

ঘ। বালক নোমান পেশাগতভাবে এবং আচরণিক বিবেচনায় ‘রানার’ কবিতার রানারের সহযাত্রী।
উদ্দীপকের নোমান ও পাঠ্য কবিতার রানার উভয়েই কর্তব্য পালনে আপসহীন। তাদের যার যার কাজ কষ্টসাধ্য। রানারের পথ চলার কষ্ট মনে দাগ কাটে। তার চলার পথের বিপদাপদ আমাদেরও বিচলিত করে। তবে তার সাহসিকতা আমাদের তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল করে তোলে। তার সময় সচেতনতা যেকোনো মানুষের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ হিসেবে বিবেচনার দাবি রাখে। নিজের জীবনে সুখ সোনার হরিণ তবু অন্যের জীবন সুখের হোক, প্রিয়জনের খবরাখবরে প্রফুল্ল হোক— এ মহৎ ভাবনা তার মহানুভবতার স্বাক্ষর বহন করে।

উদ্দীপকের বালক নোমান তার কাজের মাধ্যমে যে আদর্শবোধের স্বাক্ষর রেখেছে তাতে সে রানারের প্রায় সমতুল্য। তবে সুজনের মধ্যে কিছু পার্থক্যও রয়েছে। যেমন— রানারের সংসার ভাবনা আছে, যা নোমানের নেই। নোমানের পথের কষ্ট রানারের সমান না হলেও রানারের মতো বিপদের ঝুঁকি কিন্তু নোমানের আছে বলে আমাদের জানা নেই। রানারের মনের যে বিশালতার পরিচয় কবিতায় আছে, তা নোমানের ক্ষেত্রে অনুপস্থিত।

উত্তরের সারবস্তু: বৈশিষ্ট্য বিচারে রানার ও নোমান সমান কিন্তু রানারের যে পরিচয় আছে তার সবটা উদ্দীপকের নোমানের প্রতিফলিত হয়নি।


রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর ০২:
সব সাধকের বড় সাধক আমার দেশের চাষা
দেশ মাতারই মুক্তিকামী দেশের সে যে আশা।
মুক্তিকামী মহাসাধক মুক্ত করে দেশ,
সবারই সে অন্ন যোগায়
ব্রত তাহার পরের হিত সুখ নাহি চায় নিজে,
রৌদ্রদাহ তপ্ত তনু শুকায় মেঘে ভিজে
নাইকো গর্ব লেশ।

ক. রানার কীসের বোঝা হাতে নিয়ে চলেছে?
খ. জীবনের সব রাত্রিকে ওরা কিনেছে অল্প দামে বুঝিয়ে লেখো।
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত ‘চাষির’ মধ্য দিয়ে ‘রানার’ কবিতায় রানারের যে গুণাবলি ফুটে উঠেছে— তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত ‘চাষির’ চেয়ে ‘রানার’ কবিতায় রানার যেন স্বতন্ত্র’- উক্তিটি মূল্যায়ন করো।

 

  রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর ২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক। রানার খবরের বোঝা হাতে নিয়ে চলেছে।

খ। সামান্য বেতনের বিনিময়ে রানার রাতের ঘুম উপেক্ষা করে ডাক নিয়ে ছুটে যায়— আলোচ্য উক্তি দ্বারা এ কথাই বোঝানো হয়েছে।
রানার দেশের এক মহান পেশায় নিয়োজিত সামান্য বেতনভুক্ত কর্মচারী। তার পরিশ্রমের তুলনায় পারিশ্রমিক খুবই নগণ্য। সে সামান্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে রাতের ঘুম উপেক্ষা করে ডাকের বোঝা নিয়ে ছুটে যায়। সামান্য বেতনের বিনিময়ে সে যে রাতের ঘুমের আরামকে বিসর্জন দিয়েছে, সেটা বোঝাতেই কবি আলোচ্য মন্তব্য করেছেন।

উত্তরের সারবস্তু: সামান্য বেতনের বিনিময়ে রানার রাতের ঘুম উপেক্ষা করে ডাক নিয়ে ছুটে যায়— আলোচ্য উক্তি দ্বারা এ কথাই বোঝানো হয়েছে।

গ। উদ্দীপকে বর্ণিত ‘চাষির’ মধ্য দিয়ে ‘রানার’ কবিতায় রানারের মানবকল্যাণে কঠোর পরিশ্রম করার দিকটি ফুটে উঠেছে।
রানার খুবই পরিশ্রমী একজন মানুষ। সে কাঁধে বিশাল এক ডাকের বোঝা নিয়ে রাতের পথে ছুটে চলে। তার শরীর ক্লান্তিতে নুয়ে আসতে চায়। কিন্তু সে অবিচল। রাস্তার ভয়, বিপদ, প্রকৃতির বিরূপ ভাব কোনোটাই তার চলার গতিকে আটকাতে পারে না। ব্যক্তিগত আরাম-আয়েশ বিসর্জন দিয়ে মানবকল্যাণের নিমিত্তে সে ছুটে চলে।

উদ্দীপকের চাষি মানবকল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ। সেও রোদ, বৃষ্টি, বাদল, শীত-গ্রীষ্ম উপেক্ষা করে ব্যক্তিগত সুখকে বিসর্জন দিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে জমিতে ফসল উৎপাদন করে। তার উৎপাদিত ফসলেই সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের অন্ন-বস্ত্রের ব্যবস্থা হয়। আলোচ্য কবিতার রানারও নিজের সুখকে বিসর্জন দিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করে। পরার্থে নিজেকে নিবেদন করার এই গুণটিই উদ্দীপকের চাষির মধ্যে দেখা যায়।

উত্তরের সারবস্তু: ‘রানার’ কবিতার রানারের পরার্থে নিজেকে নিবেদিত করার গুণটিই উদ্দীপকের চাষির মধ্যে দেখা যায়।

ঘ। উদ্দীপকের চাষি এবং রানার কবিতার রানার উভয়ই মানবকল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ হলেও এদের মধ্যে স্বাতন্ত্র্য রয়েছে।
রানার কবিতায় কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে একজন রানারের চরিত্র নির্মাণ করেছেন। একজন রানারের দায়িত্ব চিঠি বা পার্সেল প্রাপকের নিকট পৌঁছে দেওয়া। রানার তাই টিম টিম আলোতে রাতের অন্ধকারে ছুটে চলে। সুখ-দুঃখে ভরা চিঠি প্রিয়জনদের কাছে পৌঁছে দেয়। তাই তার ক্লান্তি নেই, অবকাশ নেই। তাঁর স্ত্রী বিনিদ্র রাত্রি যাপন করলেও সে তার দায়িত্ব থেকে পিছপা হয় না। ক্ষুধার ক্লান্তি তাকে পরাভূত করতে পারে না। ছুটে চলাই তার ধর্ম।

উদ্দীপকের চাষি কঠোর পরিশ্রম করে ফসল উৎপাদন করে। তার উৎপাদিত ফসলেই দেশের মানুষের অন্ন-বস্ত্রের সমস্যার সমাধান হয়। সে রোদ- বৃষ্টি, শীত-গ্রীষ্ম উপেক্ষা করে নিজের সুখকে বিসর্জন দিয়ে ফসল উৎপাদন করে। মানুষের কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দিলেও সে সহজ-সরল ও নিরহংকারী। তাই চাষা তথা কৃষককে সব সাধকের বড় সাধক বলা হয়েছে। এরাই দেশের বড় সম্পদ ও আশা ভরসার স্থল।

‘রানার’ কবিতায় রানার একজন পরোপকারী মানুষ। আত্মসুখ-বিলাস বিসর্জন দিয়ে সে বৃহত্তর মানবগোষ্ঠীর স্বার্থে কাজ করে চলেছে। চাষি এবং রানার কারো কাজই সুখপ্রদ নয়। তাদের ঘামে শরীর সিক্ত হয়, ক্লান্তিতে শরীর নুয়ে পড়ে কিন্তু তারা সেসবকে পাত্তা দেয় না। রানার চিঠিপত্র ঠিকমতো পৌঁছে দিয়ে মানুষের মনের খোরাক জোগায়। আর চাষি ফসল উৎপাদন করে মানুষের শরীরের খোরাক তথা অন্নের ব্যবস্থা করে। তাই বলা যায়, তারা দুজনেই মানবকল্যাণে নিবেদিত হলেও তাদের কাজের ধরন ও সেবার পথ ভিন্ন। সুতরাং আমরা বলতে পারি, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

উত্তরের সারবস্তু: রানার মানুষের নিকট চিঠিপত্র ঠিকমতো পৌঁছে দিয়ে মানুষের কল্যাণ সাধন করে। আর চাষী ফসল উৎপাদন করে মানুষের অন্নের ব্যবস্থা করে আর এখানেই তাদের মধ্যে মূল স্বাতন্ত্র্য বিদ্যমান।


রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর ০৩: সজল দীর্ঘদিন যাবৎ একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি সময় সম্পর্কে খুবই সচেতন। তাই প্রতিদিন যথাসময়ে কর্মস্থলে হাজির হন । কর্মক্ষেত্রে তার তৎপরতা বেশ চোখে পড়ার মতো। তিনি সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করেন। এতে অফিসের সবাই তাকে খুব পছন্দ করে।

ক. লণ্ঠন শব্দের অর্থ কী?
খ. চলার পথে রানার কোনো নিষেধ মানে না কেন?
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘রানার’ কবিতার কী সাদৃশ্য রয়েছে, তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘চরিত্রগত মিল থাকলেও সজল ও ‘রানার’ এক নয়’— মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।

 

     রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর ৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক। লণ্ঠন শব্দের অর্থ হারিকেন বা তেল দিয়ে চালিত আলোর আঁধার।

খ। দায়িত্বশীলতার কারণে চলার পথে রানার কোনো নিষেধ মানে না৷
রানার মানুষের অতি প্রয়োজনীয় চিঠিপত্র নিয়ে বহু দূর থেকে দূরান্তে পৌছে দেয়। মানুষের অনেক গুরুত্বপূর্ণ খবর, দলিল-দস্তাবেজ তাকে বহন করতে হয়। তাকে খুব সতর্ক ও দায়িত্বশীলতার সাথে এসব যথাস্থানে পৌঁছাতে হয়। এই দায়িত্বশীল চেতনার কারণে চলার পথে রানার কোনো নিষেধ মানে না।

উত্তরের সারবস্তু: রানার একজন দায়িত্বশীল এবং নিষ্ঠাবান মানুষ। এ দায়িত্বশীলতার কারণেই তিনি পথের সকল বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে সম্মুখপানে ছুটে চলে।

গ। উদ্দীপকের সাথে ‘রানার’ কবিতার রানারের সততা, নিষ্ঠা, দায়িত্বশীলতা ও সময়জ্ঞানের দিক দিয়ে সাদৃশ্য রয়েছে।
‘রানার’ কবিতার রানার খুব দায়িত্ববান একজন মানুষ। সে নিজের কাঁধে করে মানুষের খবরাখবর ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সকল প্রতিবন্ধকতা মাড়িয়ে প্রাপ্তিস্থানে পৌছিয়ে দেয়। তার এ দায়িত্বশীলতার সাথে উদ্দীপকের সাদৃশ্য বিদ্যমান।

উদ্দীপকের সজল একজন দায়িত্ববোধসম্পন্ন সচেতন চাকরিজীবী। তিনি দীর্ঘদিন একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলেও সময়ের ব্যাপারে সর্বদা সচেষ্টা ছিলেন। প্রতিদিন কর্মস্থলে তিনি যথাসময়ে আসতেন। সেখানেও তার তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। তিনি তার সততা, নিষ্ঠা, কর্মতৎপরতা দিয়ে সবাইকে মুগ্ধ করেন। তার এমন বৈশিষ্ট্য তাকে ‘রানার’ কবিতার রানারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তোলে। রানার প্রতিদিন মানুষের চিঠিপত্রের বোঝা কাঁধে নিয়ে ছুটে চলে। সে রোদ-বৃষ্টি-ঝড় ও দুর্গম পথ অতিক্রম করে নির্দিষ্ট গন্তব্যে চিঠিপত্র পৌঁছে দেয়। দায়িত্ব সচেতনতা, নিষ্ঠা ও কাজের প্রতি যত্নশীল বলেই সে এমনটি করতে পারে। এদিক দিয়ে ‘রানার’ ও উদ্দীপকের সজল পরস্পর সাদৃশ্যপূর্ণ বলে প্রতীয়মান হয়।

উত্তরের সারবস্তু: সততা, নিষ্ঠা, দায়িত্বশীলতা ও সময়জ্ঞানের দিক দিয়ে উদ্দীপকের সজল এবং রানার একে অন্যের প্রতিচ্ছবি।

ঘ। চরিত্রগত মিল থাকলেও সজল ও ‘রানার’ সামাজিক অবস্থান ও চ্যালেঞ্জ নেওয়ার দিক থেকে এক নয়।
‘রানার’ কবিতার রানার একজন সচেতন ও সংগ্রামী মানুষ। জীবনযুদ্ধ করেই তার পথচলা। কর্তব্যনিষ্ঠ রানার রাত-বিরাতে দুর্গম পথে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ছুটে চলে। তার প্রিয়তমা স্ত্রী বিনিদ্র রাত্রী যাপন করে। কিন্তু প্রিয়জনদের কাছে চিঠি-পত্র পৌছানোর ক্ষেত্রে তার এতটুকু শৈথিল্য নেই তার ক্লান্তি নেই, অবকাশ নেই।

উদ্দীপকের সজল সামাজিকভাবে মর্যাদাসম্পন্ন একজন মানুষ। সে একটি সরকারি চাকরি করে। তার মাঝে নিষ্ঠা ও দায়িত্বসচেতনতা আছে। কিন্তু অফিসের সবাই তাকে খুব পছন্দ করে।

‘রানার’ কবিতার রানারের জীবন বড়োই সঙ্কটাপন্ন। প্রতি মুহূর্তে তাকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পথ চলতে হয়। মানুষের খবর নিয়ে তাকে রাত-বিরাতে মানুষের দ্বারে দ্বারে হাজির হয় রানার। তাকে খুব সুখী মানুষ বলা যায় না। সে সবার খবর পৌঁছে দিলেও তার খবর কেউ নেয় না। উদ্দীপকের দুর্গম পথ পাড়ি দিতে হয়। যেখানে থাকে জীবন হারানোর ভয়সহ নানা প্রতিবন্ধকতা। এত কিছুর পরও সে পিছু হটে না। সচেতনতার সাথে প্রতিনিধি। যাদের জীবনে দুঃখ-কষ্ট নিত্যসঙ্গী। যারা দিন আনে দিন খায়— এই বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় উদ্দীপকের সজল রানার থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক মানুষ।

উত্তরের সারবস্তু: উদ্দীপকের সজল সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত এবং সম্মানিত। অন্যদিকে রানারকে প্রতিনিয়তই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পথ চলতে হয়। তার সামাজিক অবসস্থানও সুদৃঢ় নয়। তাছাড়া রানারের কর্মক্ষেত্র সজলের কর্মক্ষেত্র থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।


আরও দেখুন:মানুষ কবিতার মূলভাব ও ব্যাখ্যা
আরও দেখুন:সেইদিন এই মাঠ কবিতার ব্যাখ্যা
আরও দেখুন:কপোতাক্ষনদ কবিতার ব্যাখ্যা
আরও দেখুন:সমাসের সহজ ব্যাখ্যা

আরও দেখুন: আনন্দধারা প্রশ্নোত্তর – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ১ম অধ্যায়
আরও দেখুন: শীত-প্রকৃতির রূপ সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ২য় অধ্যায়
আরও দেখুন: পলাশের রঙে রঙিন ভাষা সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৩য় অধ্যায়
আরও দেখুন: স্বাধীনতা তুমি সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৪র্থ অধ্যায়
আরও দেখুন: নব আনন্দে জাগো সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৫ম অধ্যায়
আরও দেখুন: আত্মার আত্মীয় সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৬ষ্ঠ অধ্যায়
আরও দেখুন: বৃষ্টি ধারায় বর্ষা আসে সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম অধ্যায়
আরও দেখুন: টুঙ্গিপাড়ার সেই ছেলেটি সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৮ম অধ্যায়
আরও দেখুন: শরৎ আসে মেঘের ভেলায় সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৯ম অধ্যায়
আরও দেখুন: হেমন্ত রাঙা সোনা রঙে সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ১০ম অধ্যায়

আরও দেখুন: বিশ্বজোড়া পাঠশালা – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ১ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: নকশা খুঁজি নকশা বুঝি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ২য় অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: মায়ের মুখের মধুর ভাষা – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৩য় অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: স্বাধীনতা আমার – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৪র্থ অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: বৈচিত্র্যে ভরা বৈশাখ – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৫ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: কাজের মাঝে শিল্প খুঁজি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৬ষ্ঠ অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: প্রাণ প্রকৃতি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৭ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: প্রাণের গান – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৮ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: চিত্রলেখা – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৯ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: শরৎ উৎসব – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ১০ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: সোনা রোদের হাসি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ১১ অধ্যায় সমাধান


আশাকরি “রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর” আর্টিকেল টি তোমাদের ভালো লেগেছে। ফেসবুক ও ইউটিউবে আমরা লাইভ ক্লাস ও নান সাজেশন শেয়ার করি। আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে ফলো করতে পারেন আমাদের ফেসবুকপেইজলিংকডিন এবং সাবক্রাইব করতে পারেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top