কপোতাক্ষনদ কবিতার ব্যাখ্যা[SSC]

কপোতাক্ষনদ কবিতার ব্যাখ্যা

   -মাইকেল মধুসূদনদত্ত
কবি পরিচিতি:
বাংলাসাহিত্যে অলৌকিক  প্রতিভা নিয়ে আবির্ভূত হয়েছেন  মহাকবি মাইকেল মধুসূদনদত্ত। তাঁর জন্ম ১৮২৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে জানুয়ারি যশোর জেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে। তাঁর  পিতা রাজনারায়ণ দত্ত এবং মাতা জাহ্নবী দেবী। মাইকেলের  শিক্ষাজীবনের  হাতেখড়ি  হয় সাগরদাঁড়ির চণ্ডীমণ্ডপে। ঐখানে গুরু’র  কাছে তিনি বাংলা, ফারসি, সংস্কৃত ও অংক শিখেছেন। তিনি বাংলা সাহিত্যে প্রথম মহাকাব্যের রচয়িতা। তাঁর অনবদ্য সৃষ্টি  মেঘনাদ-বধ কাব্য। বাংলা
চতুর্দশপদী কবিতা ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবক্তা। মাইকেলের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ: শর্মিষ্ঠা(১৮৫৯),পদ্মাবতী(১৮৬০), কৃষ্ণকুমারী(১৮৬১), বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ(১৮৬০), একেই কি বলে সভ্যতা(১৮৬১) প্রভৃতি।
১৮৭৩ সালের ২৯জুন এই মহান লেখকের জীবনাবসান ঘটে।
কপোতাক্ষনদ কবিতার ব্যাখ্যা
কপোতাক্ষনদ কবিতার ব্যাখ্যা
কপোতাক্ষনদ কবিতার ব্যখ্যা:
            সতত; হে’নদ তুমি পড়ো মোর মনে;
            সতত; তোমারি কথা ভাবি-এ বি’রলে।
কপোতাক্ষনদ কবিতার ব্যখ্যা: ফ্রান্সে থাকাকালীন কবি এই কবিতাটি রচনা করেন। প্রবাসে তাঁর সর্বদা শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত নদীর কথা মনে পড়ে। একান্ত নিরিবিলিতে এই নদের কথা সবসময় ভাবেন।
            সতত {যেমতি’লোক নিশারস্বপনে
            শোনে মায়া যন্ত্র ধ্বনি} তব কল-কলে
            জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তি’র ছলনে।।
কপোতাক্ষ নদ কবিতার ব্যখ্যা: রাতের বেলা মানুষ স্বপ্ন দেখে। স্বপ্নের মধ্যে যা দেখতে পায় সবই ভ্রান্ত। তন্দ্রা থেকে জেগে মানুষ উপলব্দি করে এটা স্বপ্ন ছিল এবং মিথ্যা। তেমনভাবে প্রবাসে জলের কলকল ধ্বনিকে  কপোতাক্ষ নদীর কলধ্বনি মনে করেন। কবির ভাবনায় সর্বদা নদী অবস্থান করেন। (আরও দেখুন)
            বহুদেশে দেখিয়াছি বহুনদ দলে
            কিন্তু-এ স্নেহের তৃষ্ণা মিটে কার জলে
কপোতাক্ষ নদ কবিতার ব্যখ্যা: কবি প্রবাসে অনেক দেশে অনেক নদী দেখেছেন। অজস্র নদীর জল পান করেছেন। কিন্তু, কোনো জল তাঁর তৃষ্ণা মিটাতে পারেনি। তিনি কপোতাক্ষ নদীর জল পান করেছেন; তাই অন্যান্য নদীর জলে তাঁর তৃষ্ণা মেটে না। এই লাইন দ্বয়ের মধ্য দিয়ে জন্মভূমির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে।
            দুগ্ধস্রোতরূপি তুমি মাতৃভূমি স্তনে।
কপোতাক্ষনদ কবিতার ব্যখ্যা: কবি জন্মভূমিকে মনে করেন মা এবং কপোতাক্ষ নদকে মনে করেন মায়ের বুকের দুধ। এই দুধ পান করলে তাঁর তৃষ্ণা মেটে।
            আর কিহে হবে দেখা য’তোদিন যাবে
            প্রজা’রূপে রাজ’রূপ সাগরেরে’ দিতে
            বারি-‘রূপ কর তুমি, এ মিনতি গাবে
            বঙ্গজ জনের কানে সখে-সখারিতে।
            নাম তার এ প্রবাসে মজি প্রেমভাবে
            লইছে যে নাম তব বঙ্গের সঙ্গীতে।
কপোতাক্ষনদ কবিতার ব্যখ্যা: প্রবাসে থেকে কবিচিত্তে উদয় হচ্ছে যে; এই নদের সাথে আর কি দেখা হবে! কপোতাক্ষ নদ প্রজারূপে সাগরকে কর দেয়। প্রজা যেমন রাজাকে কর  দেয়; তেমনি নদও সাগরকে কর দেয়। কবি প্রার্থনা করেছেন: কবি যেমন প্রবাসে থেকে কপোতাক্ষ নদের নাম নিচ্ছে;  তার নাম আকূল চিত্তে স্মরণ  করছে: তেমনি নদ যেন  তাঁকে মনে রাখে। কবির নাম যেন স্মৃতির অতলে হারিয়ে না যায় সেই প্রার্থনা করেছেন।
এই কবিতার মধ্য দিয়ে দেশপ্রেমের স্বরূপ ফুটে ওঠেছে।(আরও দেখুন)

কপোতাক্ষ নদ কবিতার শব্দার্থ:

সতত-সর্বদা।

বিরল-নির্জন স্থান।

নিশা-রাত, রজনী।

তব-তোমার।

দুগ্ধ-দুধ।

স্রোত-জলের ধারা।

বারি-পানি।

বঙ্গ-বাংলা।


 

আরও দেখুন:মানুষ কবিতার মূলভাব ও ব্যাখ্যা

আরও দেখুন:সেইদিন এই মাঠ কবিতার ব্যাখ্যা

আরও দেখুন:সমাসের সহজ ব্যাখ্যা

আরও দেখুন: আনন্দধারা প্রশ্নোত্তর – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ১ম অধ্যায়
আরও দেখুন: শীত-প্রকৃতির রূপ সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ২য় অধ্যায়
আরও দেখুন: পলাশের রঙে রঙিন ভাষা সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৩য় অধ্যায়
আরও দেখুন: স্বাধীনতা তুমি সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৪র্থ অধ্যায়
আরও দেখুন: নব আনন্দে জাগো সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৫ম অধ্যায়

আরও দেখুন: আত্মার আত্মীয় সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৬ষ্ঠ অধ্যায়
আরও দেখুন: বৃষ্টি ধারায় বর্ষা আসে সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম অধ্যায়
আরও দেখুন: টুঙ্গিপাড়ার সেই ছেলেটি সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৮ম অধ্যায়
আরও দেখুন: শরৎ আসে মেঘের ভেলায় সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৯ম অধ্যায়
আরও দেখুন: হেমন্ত রাঙা সোনা রঙে সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ১০ম অধ্যায়

আরও দেখুন: বিশ্বজোড়া পাঠশালা – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ১ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: নকশা খুঁজি নকশা বুঝি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ২য় অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: মায়ের মুখের মধুর ভাষা – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৩য় অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: স্বাধীনতা আমার – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৪র্থ অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: বৈচিত্র্যে ভরা বৈশাখ – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৫ম অধ্যায় সমাধান

আরও দেখুন: কাজের মাঝে শিল্প খুঁজি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৬ষ্ঠ অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: প্রাণ প্রকৃতি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৭ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: প্রাণের গান – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৮ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: চিত্রলেখা – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৯ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: শরৎ উৎসব – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ১০ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: সোনা রোদের হাসি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ১১ অধ্যায় সমাধান


আশাকরি “কপোতাক্ষনদ কবিতার ব্যাখ্যা[SSC] আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। আমাদের কোনো আপডেট মিস না করতে ফলো করতে পারেন আমাদের ফেসবুকপেইজলিংকডিন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top