|

আনন্দধারা প্রশ্নোত্তর – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ১ম অধ্যায়

৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ১ম অধ্যায়: সুন্দর এ পৃথিবীতে যে আনন্দধারা চির বহমান তা আমাদের উপলব্ধি করতে হবে। প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানের মধ্য দিয়ে আমরা উপলব্ধি করতে পারি। গাছের দিকে তাকালে আমরা তা বুঝতে পারি। গাছ আমাদের নিঃস্বার্থ পরোপকারী, পরম বন্ধু। গাছ আমাদের নিঃস্বার্থ পরোপকারী হওয়ার শিক্ষা দেয়। কষ্ট সহ্য করে টিকে থাকার গুণাবলি অর্জনে অনুপ্রাণিত করে। গাছ মাটির গভীরে শিকড় বিস্তার করে দৃঢ় হয়ে উপরে আকাশের দিকে মাথা তুলে দাঁড়ায়। 

শিকড়হীন হয়ে গাছ দাঁড়াতে পারে না। এ থেকে গাছ আমাদের শেখায় যে শিকড়হীন হলে চলবে না। শিকড়ই তার অবলম্বন। আমাদের দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকার সেই শিকড়— শিল্প ও সংস্কৃতি। শিল্প-সংস্কৃতির শিকড় ছিন্ন করে কোনো জাতি দাঁড়াতে পারে না। শিল্প-সংস্কৃতির শিকড়ে ভর করে আমরাও সুদৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে পারি। গাছের মতো পরোপকারী বন্ধু হতে পারি। গাছ যেমন ভূমি সংলগ্ন হয়ে বাঁচে, আমরাও তেমনই সংস্কৃতি সংলগ্ন হয়ে বাঁচি। সংস্কৃতি বিচ্ছিন্ন হয়ে বাঁচা যায় না। 

প্রকৃতি জগতের অন্যতম উপাদান গাছ থেকে পাওয়া এই শিক্ষা ও অভিজ্ঞতাকে ‘আনন্দধারা’ বলা হয়েছে। কারণ এ পাঠের মাধ্যমে আমরা আনন্দের সঙ্গে প্রকৃতিকে অবলোকন ও অনুভব করি। আর তা করেই শিল্পকলার বিভিন্ন ধারায় সংবেদনশীলভাবে প্রকাশ করতে উৎসাহী হয়ে উঠব। কারণ গাছ যেমন শিকড়হীন হয়ে বাঁচতে পারে না তেমনই শিল্প-সংস্কৃতির শিকড় ছাড়াও কোনো জাতি সজীব থাকতে পারে না।


৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ১ম অধ্যায় প্রশ্নোত্তর 

কাজ-১ : আমরা আমাদের ভালো লাগার গাছগুলোর একটি তালিকা তৈরি করতে পারি এবং বন্ধুখাতায় লিখে রাখতে পারি। [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা-৩] 

আমরা আমাদের ভালো লাগার গাছগুলোর একটি তালিকা তৈরি করে বন্ধুখাতায় লিখেছি। তালিকাটি নিচে দেওয়া হলো- 

ফুল গাছ
১. গোলাপ
২. বকুল
৩. জবা
৪. গাদা
৫. অডি 

ফল গাছ
১. পেয়ারা
২. আম
৩. পেঁপে
৪. বরই
৫. কাঁঠাল 

অন্যান্য
১. পাতাবাহার
২. মেহগনি
৩. পলাশ
৪. শিমুল
৫. কড়ই 

কাজ-২: গাছ নিয়ে আমাদের ভাবনা নানাভাবে প্রকাশ করতে পারি এবং বন্ধু খাতায় লিখে রাখতে পারি। [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা – ৩] 

গাছ নিয়ে আমাদের ভাবনা বন্ধুখাতায় নিম্নোক্তভাবে লিখে রেখেছি।  গাছ আমাদের নানাভাবে উপকার করে- 

গাছ থেকে আমরা অক্সিজেন পাই। ছায়া ও ফলমূল পাই। ঘর ও আসবাবপত্র তৈরির কাঠ পাই। গাছের কাণ্ড ও পাতা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করি। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ রোধে গাছ আমাদের সহায়তা করে। গাছের ডালে পাখির কিচির-মিচির সকাল-সন্ধ্যা আমাদের বিমল আনন্দ দেয়। এভাবে নানাভাবে গাছ আমাদের উপকার করে থাকে। গাছ থেকে আমরা শিখি, শিকড়হীন হলে চলবে না। শিকড়ই তাকে বাঁচিয়ে রাখে। আমাদের শিকড় হবে দেশীয় সংস্কৃতি। শিকড় ছাড়া গাছ যেমন মাটির ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। তেমনই দেশীয় সংস্কৃতি ছাড়া বাঙালি জাতিসত্তার অস্তিত্ব ভাবা যায় না।

কাজ-৩ : আমরা আমাদের এলাকার লোকজ সংস্কৃতি সম্পর্কে বন্ধুখাতায় লিখে অভিভাবককে দেখতে পারি। 

আমরা আমাদের এলাকার লোকজ সংস্কৃতি সম্পর্কে বন্ধুখাতায় লিখে অভিভাবককে দেখিয়েছি। এখানে নমুনা হিসোবে ‘আমার এলাকার লোকজ সংস্কৃতির পরিচয় দেওয়া হলো :- 

লোকসম্প্রদায়ের ধর্মীয় ও সামাজিক বিশ্বাস, আচার-আচরণ, জীবনযাপন প্রণালি, চিত্তবিনোদনের উপায় ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করেই গড়ে ওঠে লোকজ সংস্কৃতি। আমার এলাকা কিশোরগঞ্জ। এখানকার বেশ কয়েকটি গ্রামে বাহারি নকশি কাঁথা তৈরি হয়। তাঁতিরা তৈরি করে সুতির শাড়ি। কুমাররা নকশাদার মাটির পুতুল, ফুলদানি, শখের হাঁড়ি-পাতিল, মনসার ঘট, লক্ষ্মীর সরা ইত্যাদি তৈরি করে। এখানে বাঁশ, বেত, পাট ও শোলা দিয়ে তৈরি হয় নানারকম নিত্যব্যবহার্য ও শৌখিন জিনিসপত্র। কয়েকটি গ্রামে তৈরি হয় নকশি শিকা ও নকশি পাখা। 

কিশোরগঞ্জের সব এলাকায়ই লোককাহিনি, লোকগীতি, ছড়া, ধাঁধা, মন্ত্র, প্রবাদ-প্রবচনের প্রচলন রয়েছে। গীতি, ছড়া, ধাঁধা নিয়ে লড়াইও হয়। এছাড়া রাখালি, বাউল, ফকির- বৈরাগীর গান শোনা যায় মাঠে, গাঁয়ের পথে ঘাটে। বিয়ের গীতে মুখর হয়ে ওঠে বিয়েবাড়ি। ঘাঁটু গানের আসর আমার এলাকার পুরনো ঐতিহ্য। এলাকার সব শ্রেণির মানুষ এ গান উপভোগ করে। মেঘরানি, কাকতাড়ুয়া, লক্ষ্মীর ছড়া, নবান্ন, মাগন এসব এখনও কোনো কোনো এলাকায় প্রচলিত রয়েছে। এছাড়া আছে নৌকা বাইচ, বউছি, গোল্লাছুট, দাড়িয়াবান্ধা, ডাংগুলি, কানামাছি, ঘুড়ি উড়ানো, মোরগ লড়াই, ষাঁড়ের লড়াই ইত্যাদি খেলা। ভূত-প্রেতে বিশ্বাস, ঝাড়-ফুঁক ইত্যাদি এখনও এলাকায় রয়ে গেছে। সব মিলিয়ে আমার এলাকার লোকজ সংস্কৃতি বেশ ঐতিহ্যবাহী ও সমৃদ্ধ।


৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ১ম অধ্যায় প্রশ্নোত্তর এক কথায় উত্তর

প্রশ্ন ১। “আনন্দধারা বহিছে ভুবনে’- রবীন্দ্রনাথের কী ধরনের রচনা?
উত্তর: গান। 

প্রশ্ন ২। আমাদের সৃজনশীল কাজের প্রধান উৎস কী?
উত্তর: প্রাকৃতিক সব উপাদান ও বিষয়বস্তু। 

প্রশ্ন ৩। গাছের অনুভূতি আছে- এটি কে জানিয়েছিলেন?
উত্তর: বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু। 

প্রশ্ন ৪। আমাদের পরম বন্ধু কে?
উত্তর: গাছ।

 প্রশ্ন ৫। আমরা কীভাবে আমাদের শিকড়কে শক্ত করব?
উত্তর: নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে। 

প্রশ্ন ৬। কীসের প্রত্যেক শাখার নিজস্ব ধরন ও নিয়মনীতি রয়েছে?
উত্তর: শিল্পকলা।

 প্রশ্ন ৭। আমাদের চারপাশে কী রয়েছে?
উত্তর: প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদান। 

প্রশ্ন ৮। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কী ধরনের কবি?
উত্তর: বিশ্বকবি।

 প্রশ্ন ৯। সংগীত, যন্ত্রসংগীত কোন কলার শাখা?
উত্তর: শিল্পকলার। 

প্রশ্ন ১০। উল্টো লেখা কীভাবে সোজা করে পড়তে হয়?
উত্তর: আয়নার সামনে রেখে সোজা করে। 

প্রশ্ন ১১। কোন শিল্পী নিজের খাতায় উল্টো করে লিখতেন?
উত্তর: লিওনার্দো দা ভিঞ্চি।

প্রশ্ন ১২। আমাদের কাজের ক্ষেত্রে সব সময়ের বন্ধু হবে কী?
উত্তর: বন্ধুখাতা।


আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি এর সকল অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: আনন্দধারা প্রশ্নোত্তর – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ১ম অধ্যায়
আরও দেখুন: শীত-প্রকৃতির রূপ সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ২য় অধ্যায়
আরও দেখুন: পলাশের রঙে রঙিন ভাষা সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৩য় অধ্যায়
আরও দেখুন: স্বাধীনতা তুমি সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৪র্থ অধ্যায়
আরও দেখুন: নব আনন্দে জাগো সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৫ম অধ্যায়

আরও দেখুন: আত্মার আত্মীয় সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৬ষ্ঠ অধ্যায়
আরও দেখুন: বৃষ্টি ধারায় বর্ষা আসে সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম অধ্যায়
আরও দেখুন: টুঙ্গিপাড়ার সেই ছেলেটি সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৮ম অধ্যায়
আরও দেখুন: শরৎ আসে মেঘের ভেলায় সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৯ম অধ্যায়
আরও দেখুন: হেমন্ত রাঙা সোনা রঙে সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ১০ম অধ্যায়


আশাকরি “আনন্দধারা প্রশ্নোত্তর………..” আর্টিকেল টি তোমাদের ভালো লেগেছে। ফেসবুক ও ইউটিউবে আমরা লাইভ ক্লাস ও নান সাজেশন শেয়ার করি। আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে ফলো করতে পারেন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং সাবক্রাইব করতে পারেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।

Path Tika