|

আম আঁটির ভেঁপু সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর [SSC বাংলা]

আম আঁটির ভেঁপু সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর: ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পটি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পথের পাঁচালী‘ উপন্যাস থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এ গল্পে লেখক গ্রামীণ পরিবেশে বেড়ে ওঠা প্রকৃতিঘনিষ্ঠ দুই ভাইবোনের আনন্দিত জীবনের আখ্যান রচনা করেছেন।

মূল কাহিনী: অপু ও দুর্গা হতদরিদ্র পরিবারের দুই শিশু। তাদের বাবা পৌরহিত্য করে কোনোরকমে টেনেটুনে সংসার চালান। মা সারাদিন সংসারের কাজ করেন। অপু, দুর্গা দুজনেই দুরন্ত। দুই ভাইবোনের মধ্যে মধুর সম্পর্ক। সংসারের দারিদ্র্যের কষ্ট তাদের জীবনে প্রধান বিষয় হয়ে ওঠেনি। অধিকন্তু গ্রামীণ ফলফলাদি আহারের আনন্দ এবং বিচিত্র ‘বিষয় নিয়ে তাদের বিস্ময় ও কৌতূহল গল্পটিকে শাশ্বত মানুষের চিরায়ত শৈশবকেই স্মরণ করিয়ে দেয়। এ গল্পের সর্বজয়া পল্লি-মায়ের শাশ্বত চরিত্র হয়ে উঠেছে।

আজকের আর্টিকেলে SSC পরিক্ষায় কমন উপযোগী “আম আঁটির ভেঁপু সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর” শেয়ার করা হবে। কথা না বাড়িয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।


আম আঁটির ভেঁপু সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

আম আঁটির ভেঁপু সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর ০১: ‘সমাপ্তি’ গল্পের নায়িকা মৃন্ময়ী। সারাদিন খেলার সাথিদের নিয়ে মাঠে-ঘাটে, বন-জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানোই তার কাজ। এর গাছের জাম, ওর গাছের লিচু পেড়ে খাওয়াতেই তার যত আনন্দ। বাবার প্রতি রয়েছে তার প্রবল টান। ঘরেতে যেন সে এক বিন্দু স্থির থাকতে পারে না। প্রতিবেশীর তার প্রতি অভিযোগের শেষ নেই।

ক. ‘আম আঁটির ভেঁপু’ গল্পটির উৎস কী?
খ. নীলমণি রায়ের ভিটা জঙ্গলাবৃত হয়ে পড়ে আছে কেন?
গ. উদ্দীপকের মৃন্ময়ীর দুরন্তপনার সাথে ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের দুর্গা চরিত্রের সাদৃশ্য দেখাও।
ঘ. “উদ্দীপকে ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের একটি বিশেষ দিক প্রকাশ পেলেও সমগ্রতা প্রকাশ পায়নি”–উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

০১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ শীর্ষক গল্পটির উৎস ‘পথের পাঁচালী’ উপন্যাস।

খ. নীলমণি রায়ের মৃত্যু হওয়াতে তার স্ত্রী-সন্তানেরা সে ভিটা পরিত্যাগ করেছে; তাই ভিটাটি জঙ্গলাবৃত হয়ে পড়ে আছে।

হরিহর ও তার জ্ঞাতি-ভ্রাতা নীলমণি রায় পাশাপাশিই বাস করত। কিন্তু সম্প্রতি নীলমণি রায় মারা গেছে। পরিবারে তার স্ত্রী ও পুত্র-কন্যা ছিল। তার মৃত্যুর পরে তারা এ বাড়িতে আর থাকেনি; নিজের পিত্রালয়ে গিয়ে উঠেছে। এ কারণে বাড়িটি পরিত্যক্ত ও জঙ্গলাবৃত অবস্থায় পড়ে আছে।

উত্তরের সারবস্তু: নীলমণি রায়ের মৃত্যু হওয়াতে তার স্ত্রী-সন্তানেরা সে ভিটা পরিত্যাগ করেছে; তাই ভিটাটি জঙ্গলাবৃত হয়ে পড়েছে।

গ. উদ্দীপকের মৃন্ময়ীর দুরন্তপনা ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের দুর্গা চরিত্রের চঞ্চলতার দিকটি তুলে ধরেছে। শৈশবকাল স্বভাবতই চঞ্চলতার। এ সময় মন যা চায় তাই করতে ইচ্ছে করে। তখন মন শাসন-বারণ মানে না। এ সময় বনে-বাদাড়ে ঘুরতে ইচ্ছে করে। প্রকৃতির মাঝেই যেন খুঁজে পাওয়া যায় অনাবিল আনন্দ।

আলোচ্য উদ্দীপকে ‘সমাপ্তি’ গল্পের নায়িকা মৃন্ময়ীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মৃন্ময়ী সারাদিন খেলার সাথিদের নিয়ে মাঠে-ঘাটে, বনে-বাদাড়ে ঘুরে বেড়ায়। প্রতিবেশীদের গাছ থেকে আম, জাম, লিচু পেড়ে খায় এবং এতেই তার আনন্দ। সে ঘরে থাকতে চায় না। তার চঞ্চল মন বাইরে যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে ওঠে। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের দুর্গাও যেন বয়স ও মানসিক দিক থেকে মৃন্ময়ীর প্রতিরূপ। দুর্গাও মৃন্ময়ীর মতো সারাদিন ঘুরে বেড়ায়। মানুষের গাছের ফল পেড়ে খায়। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের মৃন্ময়ীর দুরন্তপনা ‘আম-আঁটির ভেপু’ গল্পের দুর্গার চরিত্রের চঞ্চলতার দিকটিকেই তুলে ধরেছে।

উত্তরের সারবস্তু: উদ্দীপকের মৃন্ময়ীর দুরন্তপনা ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের দুর্গা চরিত্রের চঞ্চলতার দিকটি তুলে ধরেছে।

ঘ. উদ্দীপকে ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের দুর্গার দুরন্তপনার দিকটিই কেবল উঠে আসায় তা আলোচ্য গল্পের সমগ্রতাকে স্পর্শ করতে পারেনি। কোনো রচনার সামগ্রিক বিষয়বস্তু বলতে বোঝায় ঐ রচনার মূল বক্তব্য, আনুষঙ্গিক বিষয়সহ লেখকের সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি। ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ রচনায় গ্রামীণ জীবনে দুই ভাইবোনের আনন্দময় জীবনাচরণের বর্ণনা থাকলেও এর নেপথ্যে প্রকাশ পেয়েছে দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত একটি পরিবারের জীবন-সংগ্রামের চিত্র।

‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের বিষয়বস্তুতে ফুটে উঠেছে দুই ভাইবোন অপু-দুর্গার শৈশবের চঞ্চলতা ও প্রকৃতির মাঝে তাদের আনন্দের উচ্ছ্বাস। দুর্গার বাবা-মায়ের পরিবারের অর্থকষ্ট থেকে পরিত্রাণের চেষ্টা গল্পটির অন্যতম দিক। সবকিছু মিলিয়ে অপু-দুর্গার দুরন্তপনার কাছে যদিও গল্পের বিষয় হিসেবে দারিদ্র্য মুখ্য হয়ে ওঠেনি। তবু আমরা গল্পের সর্বজয়াকে পল্লিমায়ের শাশ্বত চরিত্র হিসেবে চিহ্নিত করতে পারি। আলোচ্য উদ্দীপকেও দুর্গার মতো মৃন্ময়ীর অবাধ স্বাধীনতা ও তার দুরন্তপনার চিত্র ফুটে উঠেছে। এর বেশি কিছু আলোচিত হয়নি।

‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পে উঠে এসেছে গ্রামীণ জীবনে প্রকৃতিঘনিষ্ঠ দুই ভাইবোনের আনন্দিত জীবনের আখ্যান। পাশাপাশি উঠে এসেছে তাদের পরিবারের জীবনযুদ্ধ। কিন্তু আলোচ্য উদ্দীপকে শুধু মৃন্ময়ীর দুরন্তপনাই দেখতে পাওয়া যায়। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের একটি বিশেষ দিক প্রকাশ পেলেও সমগ্রতা প্রকাশ পায়নি।

উত্তরের সারবস্তু: উদ্দীপকে ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের দুর্গার দুরন্তপনার দিকটিই কেবল উঠে আসায় তা আলোচ্য গল্পের সমগ্রতাকে স্পর্শ করতে পারেনি।


আম আঁটির ভেঁপু সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর ০২: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় তার একটি জনপ্রিয় ছোটগল্পে একটি দরিদ্র পরিবারের অমানবিক দুর্দশার কথা বর্ণনা করেছেন। এক রাতে প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টিতে গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নীলমণির ভাঙা ঘরে পানি পড়ে এমনভাবে ভিজে যায় যে ঘরে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় নীলমণির স্ত্রী নিভা তাকে সরকারদের ঘরে আশ্রয় নেওয়ার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু নীলমণি রাজি হয় না কারণ সরকাররা ছোটলোক বিরক্ত হয়ে ময়লা জায়গায় থাকতে দেবে । তখন তার স্ত্রী রেগে গিয়ে বলেন, ‘ছেলে মেয়ে বৌকে বর্ষাবাদলে মাথা গুঁজবার ঠাঁই দিতে পারে না, অত মান-অপমান-জ্ঞান কী জন্যে?

ক. দুর্গার বয়স কত?
খ. হরিহর দশঘরা গ্রামের মাতবর লোকটির পরিচয় গোপন রাখতে বলেছিল কেন?
গ. উদ্দীপকের নীলমণি চরিত্রটি ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের হরিহরের সঙ্গে কোন দিক থেকে সম্পর্কযুক্ত? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের তুলনায় ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের বিষয়বস্তু বহুমাত্রিক— উক্তিটির পক্ষে তোমার যুক্তি দাও।

আম আঁটির ভেঁপু সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর ০২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. দুর্গার বয়স দশ-এগারো বছর।

খ. নিচু জাতের বলে হরিহর দশঘরা গ্রামের মাতবর লোকটির পরিচয় গোপন রাখতে বলেছিল।

হরিহর তার স্ত্রী সর্বজয়াকে দশঘরা গ্রামের অবস্থাপন্ন একজন লোকের কথা জানায় যে হরিহরকে মন্ত্র দেবার প্রস্তাব করেছে।’ সর্বজয়া লোকটির জাতের কথা জিজ্ঞেস করলে হরিহর কণ্ঠ নামিয়ে কাউকে বলতে নিষেধ করে। কেননা লোকটি সদৃগোপ অর্থাৎ নিচু বর্ণের।

উত্তরের সারবস্তু: নিচু জাতের বলে হরিহর দশঘরা গ্রামের মাতবর লোকটির পরিচয় গোপন রাখতে বলেছিল।

গ. উচ্চ বংশীয় অথচ অসচ্ছলতার দিক দিয়ে উদ্দীপকের নীলমণি চরিত্রটি ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের হরিহরের সাথে সম্পর্কযুক্ত।

‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পে হরিহর বংশীয় হিন্দু হওয়া সত্ত্বেও দারিদ্র্যদশায় নিপতিত। টাকা-পয়সার অভাবে তার বাড়িটা দীর্ঘদিন মেরামত করা হয়নি। বাড়ির সামনের দিকের রোয়াক ভাঙা, ফাটলে বন বিছুটি ও কালমেঘ গাছের বন গজিয়েছে। দরজা-জানালার কপাট সব ভাঙা, নারিকেলের দড়ি দিয়ে গরাদের সঙ্গে বাঁধা। মোটকথা হরিহরের বাড়িটি ছিল ভাঙাচোরা জীর্ণশীর্ণ। কিন্তু হরিহরের আত্মমর্যাদা ছিল প্রবল। ছোট জাতের লোক মন্ত্র নিতে চাইলে সে সহজে রাজি হয়নি।

উদ্দীপকের নীলমণি দরিদ্রতার কারণে দুর্দশায় নিপতিত। ঝড়বৃষ্টিতে তার ঘরে পানি পড়ে এমনভাবে ভিজে যায় যে ঘরে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে । এ সময় নীলমণির স্ত্রী সরকারদের ঘরে আশ্রয় নিতে বললে তারা ছোটলোক বলে রাজি হয় না। আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পেও আমরা দেখি হরিহরের অভাব-অনটনের সংসার, দেনার দায়ে জর্জরিত। অথচ দশঘরার লোকটি মন্ত্র নেবার কথা বললেও সরাসরি রাজি হয়নি নিচু বংশের লোক বলে। সঙ্গত কারণেই নীলমণি চরিত্রটি হরিহরের চরিত্রের সাথে সম্পর্কযুক্ত।

উত্তরের সারবস্তু: উচ্চ বংশীয় অথচ অসচ্ছলতার দিক দিয়ে উদ্দীপকের নীলমণি চরিত্রটি ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের হরিহরের সাথে সম্পর্কযুক্ত।

ঘ. উদ্দীপকের তুলনায় ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের বিষয়বস্তু বহুমাত্রিক— উক্তিটি যথার্থ।

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পটি দুটি ভাইবোনের উচ্ছ্বল ও আনন্দঘন জীবন ঘিরে রচিত। হতদরিদ্র পরিবারে জন্ম নিলেও অপু-দুর্গার জীবনে দারিদ্র্যের কষ্ট প্রধান হয়ে ওঠেনি। মায়ের চোখ এড়িয়ে দুরন্তপনার মধ্য দিয়ে তাদের দিন কেটেছে। অন্যদিকে, অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে হরিহর সর্বজয়া তাদের সংসার কোনোমতে টেনে নিয়ে গেছে। তাদের আশ্রয় ছিল ভাঙাচোরা-জীর্ণশীর্ণ ঘর। তারা ছিল ধার-দেনায় জর্জরিত। দুর্গার মা সর্বজয়ার ঘরকন্যার কাজ, গাই দোহন প্রভৃতি গ্রামীণ চিরায়ত দৃশ্য আমরা লক্ষ করি এই গল্পে।

উদ্দীপকে একটি গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নীলমণির দুঃখ-দুর্দশার কথা বর্ণিত হয়েছে। সে অভাবের কারণে ঘর মেরামত করতে পারে না। ঝড়-বৃষ্টিতে তার ঘর জলে একাকার হয়ে যায়, থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে। স্ত্রী তাকে সরকারদের বাড়িতে আশ্রয় নিতে বললেও সে রাজি হয় না তারা ছোটলোক বলে। ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পে আমরা দেখি গ্রামীণ জীবনের নানা প্রসঙ্গ উল্লিখিত হয়েছে। একটি দারিদ্র্যক্লিষ্ট পরিবারের গ্রামীণ চিত্র চমৎকারভাবে রূপায়িত হয়েছে। অন্যদিকে উদ্দীপকের কেবল নীলমণির ভাঙাচোরা ঘর আর তার অসহায়ত্বের দিক উল্লিখিত হয়েছে। তাই প্রশ্নোক্ত বক্তব্যটি সঠিক ও যথার্থ।

উত্তরের সারবস্তু: ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পে বহুমাত্রিক বিষয়ের প্রকাশ ঘটলেও উদ্দীপকে আলোচ্য গল্পের খণ্ডাংশের প্রকাশ ঘটেছে।


আম আঁটির ভেঁপু সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর ০৩:
“সেই মনে পড়ে জ্যৈষ্ঠের ঝড়ে রাত্রে নাহিকো ঘুম,
“অতি ভোরে উঠি তাড়াতাড়ি ছুটি আম কুড়াবার ধুম
সেই সুমধুর স্তব্ধ দুপুর পাঠশালা পলায়ন—
ভাবিলাম হায় আর কি কোথায় ফিরে পাব সে জীবন”।

ক. আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পটির উৎস কী?
খ. ‘আজকাল চাষাদের ঘরে লক্ষ্মী বাঁধা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকটিতে ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকটিতে শৈশবের চঞ্চলতার চিত্রই বিধৃত হয়েছে- উদ্দীপক ও ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের আলোকে তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

আম আঁটির ভেঁপু সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর ০৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পটি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পথের পাঁচালী’ উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে।

খ. আজকাল চাষাদের ঘরে লক্ষ্মী বাঁধা বলতে চাষীদের আর্থিক সমৃদ্ধির কথা বোঝানো হয়েছে।

সমাজে যারা চাষা বা নিচু জাত বলে এক সময় পরিগণিত হতো তারা তাদের পরিশ্রম দিয়ে নিজেদের ভাগ্যের উন্নয়ন করছে। ফলে অর্থনৈতিকভাবে তারাও সমৃদ্ধ। আর দেবী লক্ষ্মীকে যেহেতু সমৃদ্ধির প্রতীক মনে করা হয় তাই হরিহরের পর্যবেক্ষণ অনুসারে চাষা তথা কৃষকদের ঘরেই লক্ষ্মী বিরাজ করছে।

উত্তরের সারবস্তু: আজকাল চাষাদের ঘরে লক্ষ্মী বাঁধা বলতে চাষীদের আর্থিক সমৃদ্ধির কথা বোঝানো হয়েছে।

গ. উদ্দীপকে ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের চিরায়ত শৈশবের দিকটি ফুটে উঠেছে।

‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পটি গ্রামীণ জীবনে প্রকৃতি ঘনিষ্ঠ দুই ভাই-বোনের আনন্দঘন জীবনের আখ্যান নিয়ে রচিত হয়েছে। অপু ও দুর্গা দরিদ্র পরিবারের দুই শিশু। কিন্তু তাদের শৈশবে দারিদ্র্যের সেই কষ্ট প্রধান হয়ে ওঠেনি। অধিকন্তু গ্রামীণ ফলফলাদি আহারের আনন্দ এবং বিচিত্র বিষয় নিয়ে তাদের বিস্ময় ও কৌতূহল চিরকালের মানুষের শৈশবকেই স্মরণ করিয়ে দেয়।

উদ্দীপকেও আমরা চিরায়ত শৈশবের প্রকাশ দেখতে পাই। উদ্দীপকের কবি শৈশবের মধুমাখা দিনের কথা স্মরণ করেছেন। জ্যৈষ্ঠের ঝড়ে ভোরে আম কুড়াবার ধুম লেগে যেতো। দুপুরে স্কুল পালানোর স্মৃতি মনে পড়ে যায় কবির। এই স্মৃতিবহুল আনন্দময় শৈশবকে কবি প্রতিটি মুহূর্তে স্মরণ করেন। জীবনের পড়ন্ত বেলায় বারবার সেই শৈশবে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে তাঁর। আলোচ্য গল্পে উদ্দীপকের মতোই দুরন্তপনা প্রাধান্য পেয়েছে। দুর্গার শৈশব ছিল দুরন্তপনায় ভরপুর। সে কাউকে না বলেই যখন-তখন বাড়ি থেকে বাইরে যেত। পড়শিদের বাগানে আম কুড়ানো এবং ভাই অপুসহ সঙ্গোপনে খাওয়ার দৃশ্য শৈশবের দুরন্তপনাকে প্রকাশ করে। সুতরাং, উদ্দীপকটিতে ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের শৈশবের আনন্দঘন দিকটি ফুটে উঠেছে।

উত্তরের সারবস্তু: উদ্দীপকে ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের চিরায়ত শৈশবের দিকটি ফুটে উঠেছে।

ঘ. উদ্দীপকের কবির শৈশবের আনন্দঘন স্মৃতি যেন ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের অপু-দুর্গার দুরন্ত শৈশবকেই স্মরণ করিয়ে দেয়।

‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের উজ্জ্বল চরিত্র দুর্গা ও অপু। তাদের শৈশবের চঞ্চলতা ও প্রকৃতির সাথে গভীর সম্পর্ক আলোচ্য গল্পের মূল কেন্দ্রবিন্দু। লেখক চমৎকারভাবে এই ভাইবোনের ছোটবেলার দুরন্তপনাকে গল্পে তুলে এনেছেন।
উদ্দীপকের কবিতাংশে কবির শৈশবের রেখে আসা দিনগুলোর কথা মনে পড়ে। সে দিনগুলো তাঁর জীবনের সোনালি দিন ছিল। সেখানে কোনো বিধি নিষেধের বালাই ছিল না, ছিল না একঘেয়েমি জীবনের অবসাদ। মনের খেয়াল খুশিমত গ্রামের সর্বত্র ঘুরে বেড়ানো ছিল নিত্যদিনের কাজ। জ্যৈষ্ঠের ঝড়ে সবাই মিলে আম কুঁড়াতে যেত। দুপুরে পাঠশালা থেকে পালানো ছিল অনেক আনন্দের কাজ। জীবনের পড়ন্তবেলায় এসে সেইসব দিনের কথা কবির মনে পড়ে যায়।

‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পে উদ্দীপকের মতোই দুরন্তপনা প্রাধান্য পেয়েছে। আলোচ্য গল্পের হরিহরের কন্যা দুর্গা ও ছেলে অপুর মাঝে শৈশবের অকৃত্রিম সময় কাটানোর চিত্র অঙ্কন করা হয়েছে। দুর্গার শৈশব ছিল দুরন্তপনায় ভরপুর। যে কাউকে না বলেই যখন-তখন বাড়ি থেকে বাইরে যেত। সারাদিন প্রকৃতির মাঝে নিজেকে যুক্ত রেখে খাবার সময় ঘরে আসতো। পড়শিদের বাগানে আম কুড়ানো এবং সেই আমের কুশি জারিয়ে অপুসহ সঙ্গোপনে খাওয়ার দৃশ্য শৈশবের দুরন্তপনাকেই প্রকাশ করে। তাদের দুজনের খেলাধুলা, ঘুরে বেড়ানোর মাঝে চিরায়ত শৈশবের কৌতূহলকে জাগ্রত করে। শুকনো নাটাফল, পুতুলের বাক্স, গঙ্গা-যমুনা খেলা ও বিচিত্র বিষয় নিয়ে আনন্দ লাভের বিষয়কেই প্রকাশ করে। উদ্দীপকেও কবির স্মৃতিচারণের মধ্যে চিরায়ত শৈশবের প্রকাশ দেখতে পাই। আম কুঁড়ানো, পাঠশালা পলায়ন এসব অনুষঙ্গের মাধ্যমে কবির শৈশব ফুটে উঠেছে। সুতরাং, এ কথা সত্যি যে উদ্দীপকটিতে শৈশবের চঞ্চলতার চিত্রই বিধৃত হয়েছে।

উত্তরের সারবস্তু: উদ্দীপকের কবির শৈশবের আনন্দঘন স্মৃতি যেন ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের অপু-দুর্গার দুরন্ত শৈশবকেই স্মরণ করিয়ে দেয়।


আরও দেখুন: বাংলা ১ম সকল অধ্যায় সৃজনশীল


আশাকরি “আম আঁটির ভেঁপু সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর” আর্টিকেল টি তোমাদের ভালো লেগেছে। ফেসবুক ও ইউটিউবে আমরা লাইভ ক্লাস ও নান সাজেশন শেয়ার করি। আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে ফলো করতে পারেন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং সাবক্রাইব করতে পারেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।

Path Tika