টুঙ্গিপাড়ার সেই ছেলেটি সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৮ম অধ্যায়

৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৮ম অধ্যায়: টুঙ্গিপাড়ার সেই ছেলেটি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর জন্ম মধুমতি নদীর তীরে টুঙ্গিপাড়া গ্রামে ঐতিহ্যবাহী শেখ পরিবারে ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ। তাঁর পিতা শেখ লুৎফর রহমান এবং মাতা সায়েরা খাতুন। ছেলেবেলা থেকেই তিনি ছিলেন অত্যন্ত মানবিক ও উদার। মাত্র দশ বছর বয়সে তিনি স্কুল থেকে ফেরার পথে নিজের গায়ের জামা খুলে শীতার্ত শিশুকে পরিয়ে দিয়েছেন। বড়ো হয়ে তিনি কালক্রমে হয়ে উঠেছেন বাংলার মহানায়ক, অবিসংবাদিত নেতা।

মাতৃভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাঙালির প্রতিটি অধিকার আদায়ের সংগ্রামে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ এক ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে তিনি বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত করেছেন এবং স্বাধীনতা ঘোষণা করে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে শত্রুর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর দৃঢ় নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাঙালি তাদের স্বপ্নের স্বাধীনতা অর্জন করে। তাঁর সোনার স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করতে পরাজিত শত্রুরা ঘৃণিত নীলনকশা বাস্তবায়ন করে।

শত্রুরা ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে। তাঁর আদরের শিশু সন্তান রাসেলও শত্রুদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। বিদেশে থাকায় তাঁর দুই কন্যা শেখ হাসিনা এবং শেষ রেহানা প্রাণে রক্ষা পেয়েছিলেন। প্রিয় নেতাকে হারিয়ে বাঙালি জাতি শোকসাগরে নিমজ্জিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অমর-অক্ষয় হয়ে আছেন বাঙালির প্রতিটি ঘরে, হৃদয়ের মণিকোঠায়। প্রতিবছর ১৫ই আগস্ট ‘জাতীয় শোক দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।


টুঙ্গিপাড়ার সেই ছেলেটি সমাধান

কাজ-১: জাতীয় শোক দিবস সম্পর্কে আমরা বন্ধুখাতায় লিখতে পারি এবং ১৫ই আগস্টে শহিদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ছবি সংগ্রহ করে বন্ধুখাতায় রাখতে পারি। [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ৬২]

জাতীয় শোক দিবস সম্পর্কে আমরা বন্ধুখাতায় নিম্নোক্ত কথাগুলো লিখেছি এবং ১৫ই আগস্টে শহিদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ছবি সংগ্রহ করে বন্ধুখাতায় রেখেছি।

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বিপথগামী একদল সেনাসদস্যের হাতে বাঙালি জাতির জনক, সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে শাহাদাতবরণ করেন। বাঙালির মুক্তি স্বাধীনতা ও সাফল্য ছিল তাঁর গর্ব ও গৌরবের বিষয়। তিনি বাঙালিকে, বাংলাদেশকে বাংলা ভাষাকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসতেন। তাঁরই নেতৃত্বে এ দেশের আপামর জনসাধারণ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয় এবং নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করে। অর্জিত হয় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।

পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বঙ্গবন্ধু স্বদেশে ফিরে এসেই একের পর এক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ও পরিকল্পনা নিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে যখন সোনার বাংলা’ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তখনই তাঁর বিরুদ্ধে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করে কুচক্রী, ক্ষমতালোভী, বিপথগামী একদল সেনাসদস্য। এ দেশের পরাজিত শত্রু ও বিদেশি শত্রুদের মদদে তারা ১৫ই আগস্ট রাতের অন্ধকারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। প্রতিবছর আমরা গভীর শ্রদ্ধায় তাঁদের স্মরণ করি। আমাদের বারবার মনে হয়- যদি রাত পোহালে শোনা যেত… বঙ্গবন্ধু মরে নাই!

 

৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৮ম অধ্যায়

কাজ-২: ভালো কাজ করলে যে আনন্দ পাওয়া যায় সেই অনুভূতি আমরা বন্ধুখাতায় লিখে শিক্ষককে দেখাতে পারি।

ভালো কাজ করলে যে আনন্দ পাওয়া যায় সেই অনুভূতি আমরা বন্ধুখাতায় নিম্নোক্তভাবে লিখে শিক্ষককে দেখিয়েছি। ভালো কাজ করার মধ্যে আনন্দ আছে। আমি তখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ি। একদিন বিকাল বেলায় একা একা স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছি। রাস্তা নীরব, কোথাও কোনো মানুষজন নেই। এমন সময় রাস্তায় একজন বৃদ্ধকে দেখতে পেলাম। তিনি এতটা বৃদ্ধ যে হাঁটতে পারছিলেন না। কয়েক গজ দূরে গিয়েই তিনি বসে পড়লেন। তাই আমি বৃদ্ধকে বললাম, আপনি আমার হাত ধরুন। বৃদ্ধ হাত ধরার পর দেখলাম তিনি হাঁটতে পারছেন।

তারপর আমি তার গন্তব্যের কথা জিজ্ঞেস করলাম। তিনি ভবানীপুর গ্রামের হাজি বাড়ি যাবেন। আর ভবানীপুর গ্রামটা আমাদের পাশের গ্রাম। আমি তাকে পুরো পথ হাত ধরে নিয়ে বাড়ি পৌঁছে দিলাম। ফিরে আসার সময় তিনি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, বেঁচে থাকো বাবা। অনেক বড় হও।’ সেদিন আমার মনে হয়েছিল আমি একটা ভালো কাজ করেছি। কাজটি করে আমি খুব আনন্দিত হয়েছিলাম।


৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৮ম অধ্যায়

টিকা লিখ – কালজয়ী গান

“যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু’ মরে ‘নাই’- এই গানটি কালজয়ী গান হিসেবে স্বীকৃত। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এই কালজয়ী গানটি রচনা করেছেন হাসান মতিউর রহমান, গানটিতে সুর দিয়েছেন— মলয় কুমার গাঙ্গুলী এবং তিনিই প্রথমে গানটি পরিবেশন করেন। পরে গানটি গেয়েছেন শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন।

টিকা লিখ – জাতীয় শিশু দিবস

শিশুদের কল্যাণ ও বিকাশ নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে বিশ্বব্যাপী পালিত হয় ‘শিশু দিবস’। শিশু দিবস প্রথম পালিত হয় ১৯২০ সালের ২৩ এপ্রিল তুরছে। বিশ্ব শিশু দিবস’ ২০ নভেম্বর এবং আন্তর্জাতিক শিশু দিবস’ উদ্‌যাপন করা হয় পয়লা জুন। তবে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন দিনে পালন করা হয় শিশু দিবস’।

উন্নত বিশ্বে শিশুদের কল্যাণ ও বিকাশের জন্য নানা রকম পরিচর্যার ব্যবস্থা রয়েছে। আমাদের দেশে শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে এবং তাদেরকে সার্বিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করার লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনটিকে ‘শিশু দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সিদ্ধান্ত অনুসারে বাংলাদেশে প্রতিবছর ১৭ই মার্চ ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।


৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৮ম অধ্যায় এক কথায় উত্তর

প্রশ্ন ১। টুঙ্গিপাড়া গ্রামটি কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
উত্তর: মধুমতি নদী ।

প্রশ্ন ২। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম কোন গ্রামে?
উত্তর: টুঙ্গিপাড়া গ্রামে।

প্রশ্ন ৩। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ।

প্রশ্ন ৪। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পিতার নাম কী?
উত্তর: শেখ লুৎফর রহমান।

প্রশ্ন ৫। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মায়ের নাম কী?
উত্তর: সায়েরা খাতুন।

প্রশ্ন ৬। মা-বাবা আদর করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কী ডাকতেন?
উত্তর: খোকা।

প্রশ্ন ৭। শৈশবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেমন ছিলেন?
উত্তর: উদার ও মানবিক।

প্রশ্ন ৮। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুষ্টি ভিক্ষার চাল সংগ্রহ করে কী করতেন?
উত্তর: গরিব ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা করতেন।

প্রশ্ন ৯। শেখ লুৎফর রহমান ও সায়েরা খাতুনের আদরের খোকা কালক্রমে কী হয়েছিলেন?
উত্তর: বাংলার মহানায়ক।

প্রশ্ন ১০। ১৯৭১ সালে কার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি?
উত্তর: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের।

প্রশ্ন ১১। সোনার বাংলাদেশের স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করতে চেয়েছিল কারা?
উত্তর: একাত্তরের পরাজিত শত্রুরা।

প্রশ্ন ১২। ১৯৭৫ সালে শিশু শেখ রাসেলের বয়স কত ছিল?
উত্তর: দশ বছর।

প্রশ্ন ১৩। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার প্রাণ রক্ষা পেয়েছিল কীভাবে?
উত্তর: বিদেশে থাকায় ।

প্রশ্ন ১৪। কোন তারিখে রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয় শোক দিবস পালন করা
উত্তর: ১৫ই আগস্ট।

প্রশ্ন ১৫। বিজ্ঞানের ভাষায় সাদা ও কালো আসলে কী নয়?
উত্তর: রং।

প্রশ্ন ১৬। সাদা রং কীসের প্রতীক?
উত্তর: শান্তি ও বিশুদ্ধতার।

প্রশ্ন ১৭। কালো রং কীসের প্রতীক?
উত্তর: শোকের।

প্রশ্ন ১৮। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কাদের গুলিতে প্রাণ হারান?
উত্তর: সামরিক বাহিনীর কতিপয় কুচক্রী, ক্ষমতালোভী সদস্যদের গুলিতে।


আরও দেখুন: আনন্দধারা প্রশ্নোত্তর – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ১ম অধ্যায়
আরও দেখুন: শীত-প্রকৃতির রূপ সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ২য় অধ্যায়
আরও দেখুন: পলাশের রঙে রঙিন ভাষা সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৩য় অধ্যায়
আরও দেখুন: স্বাধীনতা তুমি সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৪র্থ অধ্যায়
আরও দেখুন: নব আনন্দে জাগো সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৫ম অধ্যায়
আরও দেখুন: আত্মার আত্মীয় সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৬ষ্ঠ অধ্যায়
আরও দেখুন: বৃষ্টি ধারায় বর্ষা আসে সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম অধ্যায়


আশাকরি “৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৮ম অধ্যায়” আর্টিকেল টি তোমাদের ভালো লেগেছে। ফেসবুক ও ইউটিউবে আমরা লাইভ ক্লাস ও নান সাজেশন শেয়ার করি। আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে ফলো করতে পারেন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং সাবক্রাইব করতে পারেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top