স্বাধীনতা আমার – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৪র্থ অধ্যায় সমাধান

শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৪র্থ অধ্যায় সমাধান: স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একই সূত্রে গাঁথা। তিনি ছিলেন মহান স্বাধীনতার ঘোষক এবং মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক। বাংলার মানুষের মুক্তির জন্য তিনি জীবনব্যাপী লড়াই করেছেন। বাঙালির অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে দীর্ঘ আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ এক উত্তাল জনসমুদ্রে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন।

রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রে তিনি উচ্চারণ করেন সেই কালজয়ী বাণী— “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।” বঙ্গবন্ধুর এ তেজোদীপ্ত ভাষণই ছিল আমাদের স্বাধীনতার ভিত্তি।


  শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৪র্থ অধ্যায় সমাধান

স্বাধীনতা

স্বাধীনতা মানুষের চরম আকাঙ্ক্ষিত অনুভূতির নাম। স্বাধীনতা হলো অন্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ না করেও নিজের অধিকার পরিপূর্ণভাবে ভোগ করা। স্বাধীনতার শব্দটির গভীরতা অনেক বিস্তৃত, যা দু’চার লাইন দিয়ে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক। তবে সহজ উপায়ে এ স্বাধীনতা অর্জিত হয়নি।

বরং এর জন্য আমাদের যুদ্ধ করতে হয়েছে টানা নয় মাস। এর শুরু হয়েছিলো ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ। সেদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে যে ঐতিহাসিক ভাষণ দেন তার ভিত্তিতে সারা বাংলার মানুষ একসাথে একটাই স্বপ্ন দেখতে শুরু করে, যার নাম স্বাধীনতা।

 

স্বাধীনতা আমার

পাঠ মূল্যায়ন

প্রশ্ন-১. স্বাধীনতা কী?
উত্তর: মানুষের আকাঙ্ক্ষিত অনুভূতির নাম।

প্রশ্ন-২. কোন শব্দটির গভীরতা অনেক বিস্তৃত?
উত্তর: স্বাধীনতা।

প্রশ্ন-৩. আমরা কোন দেশের নাগরিক?
উত্তর: স্বাধীন বাংলাদেশের।

প্রশ্ন-৪. ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু কোথায় ঐতিহাসিক ভাষণ দেন?
উত্তর: রেসকোর্স ময়দানে।

 

শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৪র্থ অধ্যায় সমাধান

মুক্তিযুদ্ধে শিল্পীদের ভূমিকা

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সারা দেশ এতে জড়িয়ে পড়ে। শিল্পীসমাজও এ যুদ্ধ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন না। রঙ-তুলিকে হাতিয়ার বানিয়ে তারা কাজে নেমে পড়েন। মুক্তিযোদ্ধাদের মনে দেশমাতৃকার জন্য যুদ্ধের উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করা ছিলো তাদের প্রধান কর্তব্য।

মনোগ্রাম, পোস্টার, কার্টুন, লিফলেট, ব্যানার, নকশা ইত্যাদির মাধ্যমে দেশে ও বহির্বিশ্বে জনমত সৃষ্টি করা তাদের প্রধান কাজ হয়ে ওঠে। শিল্পী কামরুল হাসানের নেতৃত্বে শিল্পী নিতুন কুণ্ডু, শিল্পী দেবদাস চক্রবর্তী, শিল্পী নাসির বিশ্বাস, শিল্পী প্রাণেশ মণ্ডল, শিল্প বীরেন সোম এ লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন।

 

শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৪র্থ অধ্যায় সমাধান

পাঠ মূল্যায়ন

প্রশ্ন-১. মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর কারা যুদ্ধ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন না?
উত্তর: শিল্পীসমাজ।

প্রশ্ন-২. মুক্তিযুদ্ধের সময় শিল্পীসমাজ কোনটিকে হাতিয়ার বানিয়েছিলেন?
উত্তর: রঙ-তুলিকে।

প্রশ্ন-৩. মুক্তিযুদ্ধের সময় শিল্পীসমাজের প্রধান কর্তব্য কী ছিলো?
উত্তর: মুক্তিযোদ্ধাদের মনে দেশমাতৃকার জন্য যুদ্ধের উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করা।

প্রশ্ন-৪. মুক্তিযুদ্ধের সময় কোনটি শিল্পীদের প্রধান কাজ হয়ে উঠেছিলো?
উত্তর: দেশে ও বহির্বিশ্বে জনমত সৃষ্টি করা।

প্রশ্ন-৫. কার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের সময় শিল্পীরা কাজ শুরু করেন?
উত্তর: শিল্পী কামরুল হাসান।

মুক্তিযুদ্ধের সময় শিল্পীদের আঁকা পোস্টার

মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের প্রথিতযশা শিল্পীদের আঁকা অনেক বিখ্যাত পোস্টার ছিলো। এর মধ্যে শিল্পী কামরুল হাসান দুটি পোস্টার তৈরি করেন যেগুলো দেশে-বিদেশে আলোড়ন তৈরি করে। এর মধ্যে একটি ছিলো রক্তচোষা মুখমণ্ডল, হাঁ-করা মুখে দুই দিকে দুটো দানবিক দাঁতে লাল রক্ত ঝরছে। দেখলেই কোনো রক্তপিপাসু দানবের কথা মনে পড়ে। আরেকটি পোস্টার এমন ছিলো যা দেখলেই দানবরূপী ইয়াহিয়া খানের মুখাবয়ব চোখে ভেসে উঠতো।

পোস্টার দুটির ভেতরে শিল্পীর রূপকল্পনার গভীরতা এত তীব্র ছিলো যে কলম ও তুলির দক্ষ আঁচড়ে শত্রুর প্রতি গভীরতম ঘৃণা ফুটে ওঠে। পোস্টার দুটি মুক্তাঞ্চলে বিতরণ করা হয়। মুক্তিযুদ্ধকালে আরও অনেক পোস্টার বানানো হয়েছিলো। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— ‘বাংলার হিন্দু, ‘বাংলার খ্রিষ্টান, বাংলার বৌদ্ধ, বাংলার মুসলমান, আমরা সবাই বাঙালি’, ‘সদা জাগ্রত বাংলার মুক্তিবাহিনী’, ‘বাংলার মায়েরা মেয়েরা সকলেই মুক্তিযোদ্ধা’, ‘রক্ত যখন দিয়েছি আরও রক্ত দেব’ ইত্যাদি। এরকম অসংখ্য পোস্টার ও লিফলেট আমাদের প্রথম সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত হয়েছিলো।

 

শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৪র্থ অধ্যায় সমাধান

পাঠ মূল্যায়ন

প্রশ্ন-১. মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর শিল্পী কামরুল হাসান কয়টি পোস্টার তৈরি করেন?
উত্তর: দুইটি।

প্রশ্ন-২. শিল্পী কামরুল হাসানের প্রথম পোস্টারটি দেখলে কীসের কথা মনে পড়ে?
উত্তর: কোনো রক্তপিপাসু দানবের কথা।

প্রশ্ন-৩. শিল্পী কামরুল হাসানের দ্বিতীয় পোস্টারটি দেখে কার মুখাবয়ব চোখে ভেসে উঠতো?
উত্তর: দানবরূপী ইয়াহিয়া খানের।

প্রশ্ন-৪. শিল্পী কামরুল হাসানের আঁকা পোস্টার দুইটি কোথায় বিতরণ করা হয়?
উত্তর: মুক্তাঞ্চলে।

প্রশ্ন-৫. মুক্তিযুদ্ধের সময় অঙ্কিত একটি পোস্টারের নাম লেখো।
উত্তর: ‘সদা জাগ্রত বাংলার মুক্তিবাহিনী’।

প্রশ্ন-৬. মুক্তিযুদ্ধের সময় পোস্টার ও লিফলেট কোথা থেকে প্রকাশিত?
উত্তর: বাংলাদেশের প্রথম সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে।

জাতীয় পতাকা

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার নকশাকার শিল্পী কামরুল হাসান। পতাকার নকশায় আছে সবুজ আয়তক্ষেত্রের মধ্যে লালবৃত্ত। সবুজ রঙ বাংলাদেশের সবুজ প্রকৃতি ও তারুণ্যের প্রতীক আর বৃত্তের লাল রঙ উদীয়মান সূর্য, স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মত্যাগকারীদের রক্তের প্রতীক।

জাতীয় পতাকার এই রূপ ১৯৭২ সালের ১৭ই জানুয়ারি সরকারিভাবে গৃহীত হয়। তবে প্রথম মানচিত্র খচিত পতাকার নকশা করেন শিবনারায়ণ দাস। ১৯৭০ সালের জুন মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের কক্ষে তৎকালীন ছাত্র নেতৃবৃন্দের মধ্যে আলোচনার পর পতাকার নকশা ও পরিমাপ নির্ধারণ করা হয়।

 

শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৪র্থ অধ্যায় সমাধান

পাঠ মূল্যায়ন

প্রশ্ন-১. বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার নকশার্কার কে?
উত্তর: শিল্পী কামরুল হাসান।

প্রশ্ন-২. বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার সবুজ রং কীসের প্রতীক?
উত্তর: বাংলাদেশের সবুজ প্রকৃতি ও তারুণ্যের প্রতীক।

প্রশ্ন-৩. বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার বৃত্তের লাল রং কীসের প্রতীক?
উত্তর: উদীয়মান সূর্য, স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারীদের রক্তের প্রতীক।

প্রশ্ন-৪. বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার বর্তমান রূপ কখন সরকারিভাবে গৃহীত হয়?
উত্তর: ১৯৭২ সালের ১৭ই জানুয়ারি।

প্রশ্ন-৫. বাংলাদেশের প্রথম মানচিত্র খচিত পতাকার নকশা কে করেন?
উত্তর: শিবনারায়ণ দাস।

প্রশ্ন-৬. কখন বাংলাদেশের প্রথম মানচিত্রখচিত পতাকার নকশা ও পরিমাপ নির্ধারণ করা হয়?
উত্তর: ১৯৭০ সালের জুন মাসে।

জাতীয় প্রতীক

শিল্পী কামরুল হাসানের নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকের নকশা করা হয়। মোহাম্মদ ইদ্রিসের আঁকা ভাসমান শাপলা ও শামসুল আলমের দুই পাশে ধানের শীষবেষ্টিত পাটপাতা ও চারটি তারকা অংশটি মিলিয়ে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হয়। বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকের কেন্দ্রে রয়েছে পানিতে ভাসমান একটি শাপলা ফুল, একে বেষ্টন করে আছে ধানের দুটি শীষ।

চূড়ায় পাটগাছের পরস্পরযুক্ত তিনটি পাতা এবং পাতার উভয় পাশে দুটি করে মোট চারটি তারকা। পানি, ধান ও পাট প্রতীকে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হয়েছে বাংলাদেশের নিসর্গ ও অর্থনীতি। এ তিনটি উপাদানের উপর স্থাপিত প্রস্ফূটিত শাপলা হলো অঙ্গীকার, সৌন্দর্য ও সুরুচির প্রতীক। তারকাগুলোতে ব্যক্ত হয়েছে জাতির লক্ষ্য ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা।

শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৪র্থ অধ্যায় সমাধান

পাঠ মূল্যায়ন

প্রশ্ন-১. কার নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকের নকশা করা হয়?
উত্তর: শিল্পী কামরুল হাসান।

প্রশ্ন-২. বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকের ভাসমান শাপলা কে অঙ্কন করেন?
উত্তর: মোহাম্মদ ইদ্রিস।

প্রশ্ন-৩. বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকের কেন্দ্রে কী রয়েছে?
উত্তর: পানিতে ভাসমান একটি শাপলা ফুল।

প্রশ্ন-৪. জাতীয় প্রতীকের পানি, ধান ও পাট প্রতীকে কী বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হয়েছে?
উত্তর: বাংলাদেশের নিসর্গ ও অর্থনীতি।

প্রশ্ন-৫. জাতীয় প্রতীকের প্রস্ফূটিত শাপলা কীসের প্রতীক?
উত্তর: অঙ্গীকার, সৌন্দর্য ও সুরুচির প্রতীক।


শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৪র্থ অধ্যায় সমাধান

কাজ-২: স্বাধীনতা বিষয়ে নিজের মতামত/অনুভূতি বন্ধুখাতায় লেখা।

কাজের উদ্দেশ্য: স্বাধীনতার অর্থ অনুধাবন করে নিজের অনুভূতি ও ভাবনাকে প্রকাশ করা।
কাজের ধরন: একক।

নমুনা সমাধান: স্বাধীনতা চরম আকাঙ্ক্ষিত একটি শব্দ। স্বাধীনতার আলোয় আলোকিত হয়ে মানুষের আত্মা উদ্ভাসিত হয়। তার মানবিক মর্যাদা সুসংহত হয়। স্বাধীনতা শব্দটা একটা দেশের জন্য, সে দেশের মানুষের জন্য খুব জরুরি আর প্রিয় একটা শর্ত। স্বাধীনতা আমাদের এটি বুঝতে শেখায় যে, আমাদের দেশটা আমাদেরই, অন্য কারো ভূখণ্ড নয়।

আজকে আমরা স্বাধীন দেশে বাঁচতে পারছি, স্বাধীনভাবে নিজের চিন্তা- চেতনা প্রকাশ করতে পারছি তার পেছনে মূল অবদান হচ্ছে স্বাধীনতা যুদ্ধে লাখো শহিদের। তাদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা চূড়ান্ত রূপ পেয়েছে। এজন্য তাদের জীবনের এবং বাংলাদেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানা প্রত্যেক বাঙালির একান্ত কর্তব্য। ২৬শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হয়। আমাদের প্রত্যেকের উচিত স্বাধীনতা দিবসকে শ্রদ্ধার সাথে পালন করা।

কাজ-৩: শিক্ষকের নির্দেশনা অনুযায়ী সৃজনশীল লেখার বিষয়ে ধারণা নিয়ে গল্প/কবিতা/রচনা লিখা।

কাজের উদ্দেশ্য: স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে অনুভূতি ও ভাবনাকে প্রকাশ করা।
কাজের ধরন: একক।

কাজের নির্দেশনা:
১. শিক্ষকের সহায়তী নিয়ে যে বিষয়ে লিখবে তার ব্যাপারে ভালোভাবে পড়াশোনা করা।
২. যে বিষয় নিয়ে লিখবে তার শুরুটা কেমন হয়েছে, ধারাবাহিকতা কীভাবে বজায় রাখা হয়েছে এবং শেষটা কেমন করে হয়েছে এই বিষয়গুলো ভালোভাবে আয়ত্ব করা।
৩. লেখার জন্য বিষয়বস্তু নির্বাচন করা, নির্বাচিত বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান রাখা।

 

শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৪র্থ অধ্যায় সমাধান

নমুনা সমাধান: নিচে ‘সৃজনশীল লেখার বিষয়ে ধারণা নিয়ে গল্প/কবিতা রচনা লিখা হলো:

গল্প কিশোর বঙ্গবন্ধু

ছাত্র অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর কাজী আবদুল হামিদ নামে একজন গৃহশিক্ষক ছিলেন। হামিদ সাহেব পড়ানোর পাশাপাশি গরিব ছাত্রদের সহায়তা দেওয়ার জন্য ‘মুসলিম সেবা সমিতি’ গড়ে তুলেন। যেসব গরিব ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার সঙ্গতি ছিল না তাদের জন্য বাড়ি বাড়ি ঘুরে ঘুরে চাল সংগ্রহ করা হতো। সেই চাল বিক্রি করে গরিব ছেলেমেয়েদের বই-খাতা কিনে দিয়ে সাহায্য করা হতো। তবে দুর্ভাগ্যবশত হঠাৎ করেই শিক্ষক কাজী আবদুল হামিদ মারা যান। তবে তার শিষ্য মুজিব অত্যন্ত যোগ্যতার সাথে সমিতির কাজ চালিয়ে যান। রঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাঝে সাহস, গরিবের জন্য দরদ, নেতা হওয়ার গুণ এবং দায়িত্ব পালনের প্রবল নিষ্ঠা নেই কিশোরকাল থেকেই উপস্থিত।

কবিতা: স্বাধীনতা

অগ্নিঝরা স্বাধীনতার মাস
নাম ছিলো তার মার্চ,
এই মাসেতেই পাকিস্তানিরা
করেছিলো অপারেশন সার্চ।
বাঙালি নিধনে সেদিন তারা
হয়েছিল উন্মাদ,
কেউ তো শোনেনি সেদিন এই
বাঙালির আর্তনাদ।
মুজিব নামটি সবাই জানে
ছিলো বাংলার ছেলে,
২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে
ভরলো তাকে জেলে।
তার আগেই হয়েছিল পূরণ
সুপ্ত বাসনা,
বঙ্গবন্ধু করে গিয়েছিলো
স্বাধীনতার ঘোষণা।

কাজ-৫: শিল্পী কামরুল হাসানের শিল্পকর্ম সম্পর্কে জানার চেষ্টা করা।

কাজের উদ্দেশ্য: শিল্পীর শিল্পকর্ম সম্পর্কে ধারণা নেওয়া।
কাজের ধরন: একক।

নমুনা সমাধান: ২রা ডিসেম্বর ১৯২১ সালে কলকাতায় তিনজিলা গোরস্থান রোডে প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী কামরুল হাসান জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ড্রইং-এ দক্ষতা অর্জন করে বিশ্বব্যাপী সুনাম কুড়িয়েছিলেন। কামরুল হাসানকে সবাই শিল্পী বললেও তিনি নিজে ‘পটুয়া’ নামে পরিচিতি পেতে পছন্দ করতেন।

স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে জেনারেল ইয়াহিয়ার মুখের ছবি দিয়ে তার আঁকা ‘এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে’ পোস্টারটি খুব বিখ্যাত। জীবিকাসূত্রে তিনি ১৯৪৮ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটে শিক্ষকতা করেন। এছাড়া ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও প্রচার বিভাগের শিল্প বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

এই অধ্যায়ে আমরা শিল্পী কামরুল হাসানের নাইওর, তিনকন্যাসহ আরও কয়েকটি চিত্রকর্ম দেখেছি। এই চিত্রকর্মগুলোতে শিল্পী নারীদের বিভিন্ন অবস্থা ফুটিয়ে তুলেছেন। প্রথম চিত্রে দেখতে পাই একজন চালক গরুর গাড়িতে করে নববধূ নিয়ে যাচ্ছেন, যা এক সময়ে আমাদের গ্রাম বাংলার চিত্রকে ফুটিয়ে তুলেছে। দ্বিতীয় চিত্রে শিল্পী একটি-ময়ূরের ছবি এঁকেছেন, যাতে ময়ূরের রূপ সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলেছেন।

তৃতীয় চিত্রে দেখতে পাই একজন গৃহবধূর চিত্র, যিনি’ ঘোমটা মাথায় সেজেগুজে বসে আছেন। গৃহবধূর এরূপ সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই চিত্রে। চতুর্থ চিত্রে দেখতে পাই তিন কন্যা একজনের হাতে কলসি আরেকজন লজ্জায় মুখে হাত দিয়ে রেখেছে। কাউকে দেখে হয়তো সে মুখ লুকানোর চেষ্টা করছে।

কাজ-৬: স্বাধীনতা বলতে তুমি যা বুঝো তা লেখো।

কাজের উদ্দেশ্য: অনুভূতি ও ভাবনাকে প্রকাশ করা।
কাজের ধরন: একক।

নমুনা সমাধান: সাধারণত স্বাধীনতা বলতে আমি বুঝি নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী কোনো কাজ করা। তবে প্রকৃত অর্থে স্বাধীনতা বলতে কোনো অবাধ স্বাধীনতাকে বোঝায় না। কারণ কাউকে ইচ্ছামতো সবকিছু করার স্বাধীনতা দিলে তা সমাজের অন্যজনের ক্ষতির কারণ হতে পারে, যা অশান্তি ও বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করবে। তাই স্বাধীনতা বলতে বোঝায় অন্যের কোনো কাজে হস্তক্ষেপ বা বাধা সৃষ্টি না করে নিজের ইচ্ছানুযায়ী নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থেকে কাজ করা।


আশাকরি “শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৪র্থ অধ্যায় সমাধান” আর্টিকেল টি তোমাদের ভালো লেগেছে। ফেসবুক ও ইউটিউবে আমরা লাইভ ক্লাস ও নান সাজেশন শেয়ার করি। আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে ফলো করতে পারেন আমাদের ফেসবুকপেইজলিংকডিন এবং সাবক্রাইব করতে পারেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।


আরও দেখুন:মানুষ কবিতার মূলভাব ও ব্যাখ্যা
আরও দেখুন:সেইদিন এই মাঠ কবিতার ব্যাখ্যা
আরও দেখুন:কপোতাক্ষনদ কবিতার ব্যাখ্যা
আরও দেখুন:সমাসের সহজ ব্যাখ্যা

আরও দেখুন: আনন্দধারা প্রশ্নোত্তর – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ১ম অধ্যায়
আরও দেখুন: শীত-প্রকৃতির রূপ সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ২য় অধ্যায়
আরও দেখুন: পলাশের রঙে রঙিন ভাষা সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৩য় অধ্যায়
আরও দেখুন: স্বাধীনতা তুমি সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৪র্থ অধ্যায়
আরও দেখুন: নব আনন্দে জাগো সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৫ম অধ্যায়
আরও দেখুন: আত্মার আত্মীয় সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৬ষ্ঠ অধ্যায়
আরও দেখুন: বৃষ্টি ধারায় বর্ষা আসে সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম অধ্যায়
আরও দেখুন: টুঙ্গিপাড়ার সেই ছেলেটি সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৮ম অধ্যায়
আরও দেখুন: শরৎ আসে মেঘের ভেলায় সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৯ম অধ্যায়
আরও দেখুন: হেমন্ত রাঙা সোনা রঙে সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ১০ম অধ্যায়

আরও দেখুন: বিশ্বজোড়া পাঠশালা – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ১ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: নকশা খুঁজি নকশা বুঝি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ২য় অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: মায়ের মুখের মধুর ভাষা – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৩য় অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: স্বাধীনতা আমার – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৪র্থ অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: বৈচিত্র্যে ভরা বৈশাখ – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৫ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: কাজের মাঝে শিল্প খুঁজি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৬ষ্ঠ অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: প্রাণ প্রকৃতি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৭ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: প্রাণের গান – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৮ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: চিত্রলেখা – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৯ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: শরৎ উৎসব – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ১০ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: সোনা রোদের হাসি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ১১ অধ্যায় সমাধান

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top