৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৯ম অধ্যায়: বাংলাদেশে ঋতু পরিবর্তনের ধারায় ভাদ্র ও আশ্বিন এই দুই মাস শরৎকাল। আগস্টের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত শরৎকাল স্থায়ী হয়। শরতে প্রকৃতিজুড়ে চলতে থাকে আলো-ছায়ার খেলা। বর্ষার গাঢ় রঙের মেঘ কেটে গিয়ে শরতের আকাশ ঝকঝকে হয়ে ওঠে। তখন মসৃপ নীল আকাশের গায়ে নরম সাদা মেঘ ভেসে বেড়ায়। এ সময়ে আকাশের বুকে ঝাঁকে ঝাঁকে বক উড়ে বেড়ায়।
খাল-বিলে সাদা শাপলা ফোটে। নদীর দুই ধার সাদা সাদা কাশফুলে ভরে ওঠে। হালকা বাতাসে কাশের বন দুলতে থাকে। মাঝি-মাল্লাদের কণ্ঠের গান দূর থেকে ভেসে আসে। প্রকৃতির স্নিগ্ধ কোমলতার প্রতীক হয়ে শরৎ আসে মেঘের ভেলায় ভেসে। শরৎ প্রকৃতি মানুষের মনকে কোমলতা ও শুভ্রতায় ভরিয়ে তোলে।
৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৯ম অধ্যায়
কাজ-১: আমরা খেয়ানৌকায় পারাপারের বিবরণ বন্ধুখাতায় লিখে শিক্ষককে দেখাতে পারি।
আমরা খেয়ানোকায় পারাপারের বিবরণ নিম্নোক্তভাবে বন্ধুখাতায় লিখে শিক্ষককে দেখিয়েছি। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। ছোটো-বড় অসংখ্য নদ-নদী জালের মতো ছড়িয়ে আছে এ দেশে। যাতায়াতের জন্য এই নদ-নদীগুলো জলপথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। জলপথে যানবাহনের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার নৌকা, লঞ্চ, স্টিমার, স্পিডবোট ইত্যাদি রয়েছে। এসবের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় খেয়ানৌকা। আদিকাল থেকেই এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এগুলো দেখা যায়। খেয়াঘাটে এ ধরনের নৌকাগুলো সারে সারে বাঁধা থাকে।
মানুষ ও জিনিসপত্র পারাপারের ক্ষেত্রে এ নৌকাগুলোর ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ করা যায়। নানা প্রয়োজনে নদীর এপাড়ের মানুষ ওপাড়ে যায়, আবার ওপাড়ের মানুষ এপাড়ে আসে। খেয়ানৌকা নদী পারাপার করে দুই পাড়ের মানুষের মধ্যে মেলবন্ধনের এক সেতু তৈরি করে। গঞ্জে, বন্দরে নানা রকম ‘ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের আনা-নেওয়া ও কেনাকাটার জন্য মানুষ খেয়ানৌকার সাহায্যে নদী পার হয়। খেয়ানৌকাগুলো আকারে ছোটো কিন্তু দেখতে সুন্দর। পারাপারের সময় মাঝিরা দরদ ভরা কণ্ঠে গান গায় আর বৈঠা চালায়:
মন মাঝি তোর বৈঠা নে রে
আমি আর বাইতে পারলাম না..
সারা জনম উজান বাইলাম
ভাটির নাগাল পাইলাম না-
আমি আর বাইতে পারলাম না।
শরৎ আসে মেঘের ভেলায় সমাধান
টীকা লিখ – শরতে বাংলার প্রকৃতি
বাংলাদেশের কোমল-স্নিগ্ধ ঋতু শরৎ। ভাদ্র-আশ্বিন এই দুই মাস নিয়ে শরৎকাল। শরতের সৌন্দর্য বাংলার প্রকৃতিকে করে তোলে রূপময়। রাতের অন্ধকার ফিকে হয়ে আসতেই আকাশে ডানা মেলে উড়ে যায় পাখির ঝাক। শিমুল তুলোর মতো আকাশজুড়ে ভেসে চলে সাদা মেঘের ভেলা। সজীব গাছপালার ওপর বয়ে যায় শিউলি ফুলের মদির গন্ধভরা ফুরফুরে মিষ্টি বাতাস। সোনার বরন সূর্যের আলোয় ভরে যায় চারদিক।
ধানখেতের ওপর খেলে যায় উদাস হাওয়া। নদীতীরের সাদা কাশফুল হাতছানি দিয়ে ডাকে। ডিঙি নৌকা বেয়ে মাঝি গেয়ে ওঠে ভাটিয়ালি গান। নদীর চরে চখাচখি, পানকৌড়ি, বালিহাঁস, খঞ্জনা পাখি ডেকে চলে। বিলের জলে ফুটে থাকে সাদা ও লাল শাপলা। চোখে সম্ভাবনার স্বপ্ন এনে সবুজ ধানখেতটা একবার চেয়ে দেখে কৃষক। শারদীয় দুর্গাপূজার মহা ধুম পড়ে যায় এ সময়। শরতের জ্যোত্মার রূপ নীল আকাশে ছেয়ে অপরূপ মোহময় করে তোলে। মনোরম প্রকৃতি মানুষের জীবনেও বুলিয়ে দেয় এক প্রশান্তির আমেজ।
৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৯ম অধ্যায়
টীকা লিখ – শরৎকাল
ভাদ্র ও আশ্বিন এই দুই মাস মিলে শরৎকাল। বাংলা ষড়ঋতুর তৃতীয় ঋতু শরৎ। পৃথিবীর প্রধান চারটি ঋতুর অন্যতম একটি ইংরেজি বর্ষপঞ্জিকা অনুযায়ী আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত শরৎকালের স্থায়িত্ব। শরৎ আমাদের মাঝে নানান উৎসবের আগমনী বার্তা নিয়ে আসে। শরতের প্রকৃতি হয় কোমল, নরম, স্নিগ্ধ ও আরামদায়ক। বর্ষার শেষে শরতের এক পশলা বৃষ্টি মানুষকে সতেজ করে তোলে।
নদী, হাওর, বিল ও পুকুরের পরিষ্কার, স্বচ্ছ আর নির্মল পানিতে শাপলা ফোটে। এ সময় আবহাওয়ায় নাতিশীতোষ্ণ অবস্থা বিরাজ করে। বর্ষার কালো মেঘ দূর হয়ে আকাশ থাকে নির্মল ও স্লচ্ছ। অবারিত সবুজ মাঠ শরতের আরেকটি অসাধারণ দৃশ্য। বিশাল বিস্তৃত সবুজ মাঠের দিক থেকে চোখ ফেরানো দায়। এ সময় কৃষক তার ফসলি জমিতে স্বপ্ন বোনে। সবুজ ফসলের আনন্দে কৃষকের মন ভরে যায়। তার পরিশ্রমের সমস্ত ক্লান্তি, অবসাদ দূর হয়ে যায়।
৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৯ম অধ্যায় এক কথায় উত্তর
প্রশ্ন ১। স্নিগ্ধতা ও কোমলতার প্রতীক কোন ঋতু?
উত্তর: শরৎকাল।
প্রশ্ন ২। শরতের আকাশের বুকে ঝাঁকে ঝাঁকে কী উড়ে বেড়ায়?
উত্তর: বক।
প্রশ্ন ৩। শরতের নীল আকাশের গায়ে রূপকথার গল্প বুনে চলে কে?
উত্তর: সাদা মেঘ।
প্রশ্ন ৪। বর্ষার মেঘ কেটে গিয়ে শরতের আকাশ কেমন হয়ে ওঠে।
উত্তর: ঝকঝকে।
প্রশ্ন ৫। শরতের প্রকৃতিজুড়ে কীসের খেলা চলতে থাকে?
উত্তর: আলোছায়ার।
প্রশ্ন ৬। রঙের ক্ষেত্রে হালকা থেকে গাঢ় অর্থে ব্যবহার করা হয় কী?
উত্তর: আলোছায়া।
প্রশ্ন ৭। কোনো বস্তুর যে অংশে আলো পড়ে তাকে কী বলে?
উত্তর: আলো।
প্রশ্ন ৮। কোনো বস্তুর যে অংশে আলো না পড়ার কারণে অন্ধকার থাকে তাকে কী বলে?
উত্তর: ছায়া।
প্রশ্ন ৯। কোনো বস্তুর উপরের অংশের গুণমান দেখা এবং অনুভব করা যায় তাকে কী বলে?
উত্তর: বুনট ।
প্রশ্ন ১০। বুনট প্রধানত কয় ভাগে বিভক্ত?
উত্তর: চারভাগে
প্রশ্ন ১১। রুক্ষ, মসৃণ, নরম ও কঠিন এগুলো কীসের ভাগ?
উত্তর: বুনটের।
প্রশ্ন ১২। শরতের হালকা বাতাসে কোন বন দুলে ওঠে?
উত্তর: কাশবন।
প্রশ্ন ১৩। শরৎকালে নদীর বুকে কী ভেসে বেড়ায়?
উত্তর: সারি সারি পাল তোলা নৌকা।
আরও দেখুন: আনন্দধারা প্রশ্নোত্তর – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ১ম অধ্যায়
আরও দেখুন: শীত-প্রকৃতির রূপ সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ২য় অধ্যায়
আরও দেখুন: পলাশের রঙে রঙিন ভাষা সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৩য় অধ্যায়
আরও দেখুন: স্বাধীনতা তুমি সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৪র্থ অধ্যায়
আরও দেখুন: নব আনন্দে জাগো সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৫ম অধ্যায়
আরও দেখুন: আত্মার আত্মীয় সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৬ষ্ঠ অধ্যায়
আরও দেখুন: বৃষ্টি ধারায় বর্ষা আসে সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম অধ্যায়
আরও দেখুন: টুঙ্গিপাড়ার সেই ছেলেটি সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৮ম অধ্যায়
আশাকরি “৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৯ম অধ্যায়” আর্টিকেল টি তোমাদের ভালো লেগেছে। ফেসবুক ও ইউটিউবে আমরা লাইভ ক্লাস ও নান সাজেশন শেয়ার করি। আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে ফলো করতে পারেন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং সাবক্রাইব করতে পারেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।