বৃষ্টি ধারায় বর্ষা আসে সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম অধ্যায়

৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম অধ্যায়: গ্রীষ্মের দারুণ তাপে প্রকৃতি যখন তপ্ত, শুকনো তখন বর্ষা শীতল প্রাণের পরশ নিয়ে আসে। বর্ষার আগমনে প্রকৃতি প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে। গছে গাছে নতুন পাতা গজায়। অবিরাম বৃষ্টি ধারায় সবুজ প্রকৃতি মনভোলানো রূপ ধারণ করে। বৃষ্টিতে প্রকৃতিতে তৈরি হয় অপূর্ব সুরমূর্ছনা। কখনো টিপটিপ করে ধীর গতিতে, কখনো মাঝারি গতিতে, কখনো দ্রুত গতিতে বা মুষলধারে।

বর্ষার মেঘের বিজলি চমক, মেঘের গুরুগুরু শব্দে চারদিক কম্পিত হয়। বৃষ্টিধারার সুরে আর মেঘের শব্দে প্রকৃতি জুড়ে যেন তাল, মাত্রা, লয় আর ছন্দের খেলা চলে। এ সময় চারপাশের প্রকৃতিতে ” পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। বর্ষার আকাশ কখনো মেঘে ঢাকা থাকে, আবার কখনো মেঘের ফাঁকে একটু আলোর হাসি ফুটে ওঠে। এ যেন আমাদের মুখের প্রতিচ্ছবি। আনন্দ, কষ্ট, হাসি, কান্নাসহ নানা রকম অনুভূতি যেমন আমাদের মুখের ভাবে প্রকাশ পায়, বর্ষার আকাশটিও যেন তেমন।

বর্ষা একদিকে ফসলের ক্ষতি করে, অন্যদিকে পলিমাটি বয়ে আনে। বর্ষার রূপ-সৌন্দর্য নিয়ে অনেক গল্প, কবিতা, গান রচিত হয়েছে। কবি কাজী নজরুল ইসলাম বর্ষাকে ‘চঞ্চলা মেয়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন। রবীন্দ্রনাথ বর্ষা নিয়ে অসংখ্য গান লিখেছেন। বর্ষাকাল গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময়। গাছ আমাদের পরম বন্ধু। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বর্ধন এবং পরিবেশ রক্ষায় গাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


  ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম অধ্যায়

কাজ-১: বর্ষা প্রকৃতি সম্পর্কে আমাদের ধারণা আমরা বন্ধুখাতায় লিখতে পারি। [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ৪৬]

বর্ষা প্রকৃতি সম্পর্কে আমাদের ধারণা আমরা বন্ধুখাতায় নিম্নোক্তভাবে লিখলাম। বর্ষা প্রকৃতি দেখতে বের হই। গ্রীষ্মের পরেই মহাসমারোহে বর্ষা আসে। আষাঢ়-শ্রাবণ এই দুই মাস মিলে বর্ষাকাল। মেঘের গুরুগম্ভীর গর্জনে প্রকৃতি থেমে থেমে শিউরে ওঠে। শুরু হয় মুষলধারায় বৃষ্টি। মাঠ-ঘাট পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়।

প্রকৃতিতে দেখা দেয় মনোরম সজীবতা। জনজীবনে প্রশান্তি ফিরে আসে। বৃষ্টির পানিতে মাঠ-ঘাট, পুকুর-ডোবা, নদী-নালা ভরে ওঠে। এ সময় মানুষকে আনন্দ লাভের মতো দুর্ভোগও পোহাতে হয়। বর্ষায় প্রকৃতি ঘন ঘন রং বদলায়। এ সময় নানা রকম ফুল ফোটে এবং ফল পাওয়া যায়।

কাজ-২: আমরা জাতীয় বৃক্ষরোপণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আমাদের মতামত বন্ধুখাতায় লিখে শিক্ষককে দেখাতে পারি।

আমরা জাতীয় বৃক্ষরোপণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আমাদের মতামত বন্ধুখাতায় নিম্নোক্তভাবে লিখে শিক্ষককে দেখিয়েছি। পরিবেশ শান্ত, শীতল ও মনোমুগ্ধকর রাখতে গাছের ভূমিকা অপরিহার্য। তাই অপ্রয়োজনে বৃক্ষ নিধন করা উচিত নয়। পরিবেশ বাঁচাতে ও সুন্দর করে গড়ে তুলতে চাইলে বৃক্ষরোপণ বাড়াতে হবে। যুগে যুগে মহামানব, জ্ঞানী, গুণী, বিজ্ঞানীরা বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যা করতে উৎসাহিত করেছেন।


বৃষ্টি ধারায় বর্ষা আসে সমাধান

টীকা লিখ – বর্ষায় বাংলার প্রকৃতি

বর্ষাকাল বাংলাদেশের মানুষের জীবনে সুখ ও আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে। বৃষ্টির ছোঁয়া পেয়ে গ্রীষ্মের বিবর্ণ প্রকৃতি হয়ে ওঠে কোমল আর সজীব। গাছপালা নতুন পত্রপল্লবে ভরে ওঠে, উর্বর হয়ে ওঠে ফসলের মাঠ। আকাশে ঘন কালো মেঘের আনাগোনা চলে। কখনো কখনো অঝোর ধারায় বৃষ্টি নামে। নদী-নালা, খাল-বিল, মাঠ-ঘাট পানিতে পূর্ণ হয়ে ওঠে। ছোটো ছেলেমেয়েরা কলার ডেলা বা কেয়াপাতার নৌকা ভাসিয়ে আনন্দে মেতে ওঠে। বয়স্করা ঘরে বসে খোশগল্প করে সময় কাটান। খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষ কাজে যেতে পারে না, ফলে তাদের কষ্ট হয়। এসময় নৌকায় যাতায়াত ও ব্যবসায়-বাণিজ্য চলে। কেয়া, কামিনী, কদম, জুঁই, বেলি, টগর, চাঁপা ফুলের সুগন্ধে ভরে ওঠে চারদিক। পেয়ারা, কলা, চালকুমড়া, ঝিঙা, করল্লা, ঢেঁড়স ইত্যাদি ফল ও তরকারি এ সময় পাওয়া যায়। প্রচুর মাছও পাওয়া যায় এ সময়। প্রকৃতির অপরূপ দৃশ্য মানুষের সিত্ত-স্নিগ্ধ মনেও ফেলে গভীর প্রভাব।

৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম অধ্যায়

টীকা লিখ – বিশ্ব পরিবেশ দিবস

প্রতি বছর ৫ জুন বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক কর্মোদ্যোগ আর জনসচেতনতার মাধ্যমে পরিবেশ সচেতনতার লক্ষ্যে ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ পালিত দিবস হয়। এই দিনটিতেই জাতিসংঘের মানবিক পরিবেশ কনফারেন্স (United Nations Conference on the Human Environment) শুরু হয়। এই কনফারেন্স চলে ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের ৫ থেকে ১৬ জুন অবধি । এই কনফারেন্স ঐ বছরই চালু করে জাতিসংঘের সাধারণ সভা। তখন থেকেই প্রতি বৎসর এই দিবস পালিত হয়ে আসছে। দিবসটি প্রথম পালিত হয় ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে। প্রতি বছরই দিবসটি আলাদা আলাদা শহরে, আলাদা আলাদা প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে পালিত হয়। এই দিবসটি ধরিত্রী দিবসের অনুগামী।

৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম অধ্যায়

টীকা লিখ – ভাটিয়ালি গান

ভাটিয়ালি গান মূলত মাঝিদের সৃষ্টি। নদ-নদী পূর্ণ এলাকায় এসব গান রচিত হয়েছে। বিশেষত ব্রহ্মপুত্র নদের উত্তর-পূর্ব দিকের অঞ্চল ভাটিয়ালি গানের ব্যাপক চর্চা হয়। মাঝি, নৌকা, দাঁড়, গুণ ইত্যাদি বিষয়কে জড়িয়ে ভাটিয়ালি গান সূচিত হয়। গ্রামীণ জীবনের মানুষের নানা রকম সমস্যা, সংকট, সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা ও বাস্তব অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি নিয়ে এ গান রচিত হয়।

৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম অধ্যায়

টীকা লিখ – নাইওর

বিয়ের পর মেয়েরা বাবার বাড়িতে অতিথি হয়ে আসার প্রথাকে নাইওর বলে। আগেকার দিনে গ্রামীণ জীবনে। মেয়েরা বাবার বাড়ি ছেড়ে শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার দীর্ঘদিন পর বাবার বাড়ি বেড়ানোর সুযোগ পেত। বছরের পর বছর কেটে যেত তবু শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে যাওয়ার জন্য গৃহবধূরা অনুমতি পেত না। তখন বাবার বাড়িতে ‘নাইওর’ যাওয়ার জন্য ব্যাকুল হতো।


৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম অধ্যায় এক কথায় উত্তর

প্রশ্ন ১। বহু বর্ণের মিশ্রণকে কী বলে?
উত্তর: বর্ণচক্র।

প্রশ্ন ২। বর্ণচক্র কে আবিষ্কার করেছেন?
উত্তর: বিজ্ঞানী নিউটন।

প্রশ্ন ৩। মৌলিক রং কয়টি ও কী কী?
উত্তর: তিনটি।

প্রশ্ন ৪। ছবি আঁকার রং কয় প্রকার?
উত্তর: দুই প্রকার প্রাথমিক ও মিশ্র রং।

প্রশ্ন ৫। প্রাথমিক রং কাকে বলে?
উত্তর: লাল, নীল ও হলুদ এই তিনটি রংকে প্রাথমিক রং বলে।

প্রশ্ন ৬। বাংলা বর্ষপঞ্জির কোন দুই মাস নিয়ে বর্ষাকাল?
উত্তর: আষাঢ় ও শ্রাবণ।

প্রশ্ন ৭। কোন তারিখে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হয়?
উত্তর: ৫ জুন।

প্রশ্ন ৮। প্রকৃতিতে রিমঝিম শব্দের ছন্দ তুলে কে আসে?
উত্তর: বর্ষা।

প্রশ্ন ৯। গ্রীষ্মের গরমে শুকনো প্রকৃতিতে বর্ষার জল কী নিয়ে আসে?
উত্তর: নতুন প্রাণ।

প্রশ্ন ১০। বর্ষাকালে বৃষ্টির পানিতে পুকুরগুলো কেমন হয়?
উত্তর: কানায় কানায় ভরে ওঠে।

প্রশ্ন ১১। বর্ষার আগমনে প্রকৃতি কেমন হয়ে ওঠে?
উত্তর: চঞ্চল।

প্রশ্ন ১২। মৃদঙ্গের মতো দেখতে বাদ্যযন্ত্রটির নাম কী?
উত্তর: মাদল বা ঢোল।

প্রশ্ন ১৩। কখন প্রকৃতি জুড়ে তাল, লয়, যাত্রা, ছন্দের খেলা চলে?
উত্তর: বর্ষাকালে।

প্রশ্ন ১৪। ‘তাল’ শব্দের উৎপত্তি কোথা থেকে?
উত্তর: তালি।

প্রশ্ন ১৫। মাত্রার ছন্দবদ্ধ সমষ্টিকে কী বলে?
উত্তর: তাল।

প্রশ্ন ১৬। সংগীতে গতিকে কী বলা হয়?
উত্তর: ‘লয়’।

প্রশ্ন ১৭। নিয়মবদ্ধ মাত্রার সমাবেশকে কী বলে?
উত্তর: ছন্দ।


আরও দেখুন: আনন্দধারা প্রশ্নোত্তর – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ১ম অধ্যায়
আরও দেখুন: শীত-প্রকৃতির রূপ সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ২য় অধ্যায়
আরও দেখুন: পলাশের রঙে রঙিন ভাষা সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৩য় অধ্যায়
আরও দেখুন: স্বাধীনতা তুমি সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৪র্থ অধ্যায়
আরও দেখুন: নব আনন্দে জাগো সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৫ম অধ্যায়
আরও দেখুন: আত্মার আত্মীয় সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৬ষ্ঠ অধ্যায়


আশাকরি “৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম অধ্যায়” আর্টিকেলটি তোমাদের ভালো লেগেছে। ফেসবুক ও ইউটিউবে আমরা লাইভ ক্লাস ও নান সাজেশন শেয়ার করি। আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে ফলো করতে পারেন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং সাবক্রাইব করতে পারেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top