আমার পথ প্রবন্ধের মূলভাব
আমার পথ প্রবন্ধটি নজরুলের ’রুদ্রমঙ্গল’ থেকে সংকলন করা হয়েছে। কাজী নজরুল ইসলামের “আমার পথ” প্রবন্ধটির মধ্যে নিজের জীবনদর্শন ও আদর্শের স্বরুপ ফুটে ওঠেছে। এই প্রবন্ধের মূলভাব নিম্নে তুলে ধরা হলো:
নজরুল বিশ্বাস করেন যে, মানুষকে তার নিজের পথ নিজেকে নির্ধারণ করতে হবে; এবং নিজেকে নিজের কর্ণধার হতে হবে। তার নিজের নির্ধারিত পথে ; নিজের নির্ধারণকৃত চেনা বিশ্বাসেই নিজেকে চলতে-ফিরতে হবে। যদ্যপি কাজী নজরুল সর্বপথে যেতে রাজি; তথাপি যে পথ তাঁর সত্যকে প্রতিষ্ঠা করতে দিবে না; সে পথে তিনি অগ্রসর হতে নারাজ। রাজভয় অথবা লোকভয়সহ দুনিয়ার যাবতীয় ভয়ই কাজী নজরুলকে তাঁর সত্য থেকে আলাদা করতে পারবে না। নজরুল সত্যের উদ্ঘাটন করাকে জীবনের সবচেয়ে অনবদ্য কাজ বলে মনে করেন। তিনি উপলব্ধি করেনযে, মানুষকে একমাত্র মুক্তি দিতে পারে বা আবদ্ধ শৃংখল থেকে মুক্ত করতে পারে তার নিজের সত্য। নজরুল ইসলাম অসাম্প্রদায়িক চেতনার একজন প্রাণপুরুষ ছিলেন। তিনি মনে-প্রাণে স্বীকার করতেন যে, ধর্মের নামে বিভেদ সৃষ্টি করা অনুচিত বা নিছক ভণ্ডামী। তিনি আরও বিশ্বাস করতেন যে, সকল ধর্মের মানুষকে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। প্রবন্ধের নানা অংশে এই মূলভাবগুলির বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। নজরুল বলেছেন, “আমার কর্ণধার আমি নিজেই। আমার পথ দেখাবে আমার সত্য।” এই উক্তিটির মধ্য দিয়ে আত্ম-চেতনা ও আত্মমহিমার প্রতি গুরুত্বের কথা জনসম্মুখে জানান দেন। নজরুলের মতে, নিজের সত্য হচ্ছে, নিজের গুরু। তিনি আরও বলেন মানুষ অতি বিনয় দেখাতে গিয়ে নিজের সত্যকে অস্বীকার করে ফেলে; যার দরুণ মানুষকে এই বিনয় ছোট করে ফেলে। সুতরাং, নিজের সত্যকে উদ্ঘাটন করার জন্য অতি বিনয়ীভাবকে বর্জন করতে হবে। আরও দেখুন

আমার পথ প্রবন্ধের মূল উপজীব্য / আমার পথ প্রবন্ধের ব্যাখ্যা
আমার পথ প্রবন্ধটির মূল উপজীব্য বিষয় হলো ব্যক্তিগতসত্তা জাগ্রত করা। নজরুল মনে করেন, পরাবলম্বন মানুষকে নিস্তেজ করে ফেলে; যতদ্রুত সম্ভব পরাবলম্বন বাদ দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, নিজের আত্মাকে চিনলে আত্মনির্ভরতা আসে—আত্মনির্ভরতার কারণে মানুষ অসাধ্য সাধন করতে পারবে।
নজরুল তাঁর পথ সম্পর্কে বলেন যে, তাঁর উদ্দেশ্য হলো একটি আদর্শ সমাজ গঠন করা এবং একটি আদর্শ রাষ্ট্র তৈরি করা। নজরুল এমন একটি রাষ্ট্র পেতে চান, যেখানে ধর্ম-বর্ণের ভিত্তিতে কোনো তফাৎ থাকবে না; এবং রাষ্ট্রের সকল মানুষই সমান মর্যাদাবান। আরও দেখুন
আমার পথ প্রবন্ধের শব্দার্থ
কর্ণধার—নেতৃত্ব প্রদান করার সামর্থ আছে এমন ব্যক্তিবর্গ, কান্ডারী।
নমস্কার—প্রণাম।
কুর্নিশ—অভিবাদন।
গুরু—শিক্ষক, আচার্য, দীক্ষাদাতা।
দম্ভ–দর্প, অহঙ্কার, গর্ব।
আত্মকে—নিজেকে।
বিনয়—নম্রতা।
সারথি—রথচালক।
স্পর্ধা–ঔদ্ধত্যপূর্ণ দুঃসাহস, আস্ফালন, দর্প।
নিষ্ক্রিয়—ক্রিয়াহীন, নিষ্কর্মা, অলস।
শির—মস্তক, মাথা।
অন্তরায়—বাধা, প্রতিবন্ধকতা, বিঘ্ন।
মেকি—মিথ্যা, কপট।
সম্মার্জনা—ঘষেমেজে পরিষ্কার করা। (আরও দেখুন: আমার পথ প্রবন্ধের মূলভাব)
আগুনের ঝান্ডা—আগুনের পতাকা, অগ্নিনিশান, আগুনের ধ্বজা।

আমার পথ প্রবন্ধের বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর(mcq)
১. কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম কত সালে?
ক. ১৮৬১
খ. ১৮৯৯
গ. ১৯৪১
ঘ. ১৯৭৬
২. নজরুলের পিতার নাম কী? (আরও দেখুন: আমার পথ প্রবন্ধের মূলভাব)
ক. কাজী ফকির আহমেদ
খ. কাজী জাকির আহমেদ
গ. শওকত আহমেদ
ঘ. খোরশেদ আলী
৩. কাজী নজরুলের মাতার নাম কী? (আরও দেখুন: আমার পথ প্রবন্ধের মূলভাব)
ক. আমেনা বেগম
খ. রাহেলা আক্তার
গ. জাহেদা বেগম
ঘ. জাহেদা খাতুন
৪. কত সালে নজরুল বাঙালি পল্টনে যোগদান করেন?
ক. ১৯১৩
খ. ১৯১৯
গ. ১৯১৫
ঘ. ১৯১৭
৫. কত বছর বয়সে নজরুল দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হন?
ক. তেতাল্লিশ বছর
খ. পয়তাল্লিশ বছর
গ. ছিয়াত্তর বছর
ঘ. কুড়ি বছর
৬. ’কুহেলিকা’ কোন ধরণের রচনা?
ক. কবিতা
খ. গল্প
গ. উপন্যাস
ঘ. প্রবন্ধ
৭. কত সালে কাজী নজরুল মৃত্যুবরণ করেন?
ক. ১৯৭৬
খ. ১৯৭২
গ. ১৯৪১
ঘ. ১৯৭৫
৮. কে আমার পথ দেখাবে?
ক. সত্য
খ. মিথ্যা
গ. বিনয়
ঘ. কোনোটি নয়
৯. কোনটি মানুষকে ছোট করে ফেলে?
ক. অতি বিনয়ি
খ. সত্য
গ. মিথ্যা
ঘ. আত্মনির্ভরতা
১০. কোনটি মানুষকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে?
ক. আত্ম নির্ভরতা
খ. অহংকার
গ. পরাবলম্বন
ঘ. কোনোটি নয়
১১. কোনটি নজরুলের প্রবন্ধগ্রন্থ নয়।
ক. দুর্দিনের যাত্রী
খ. শিউলিমালা
গ. রুদ্রমঙ্গল
ঘ. যুগবাণী
১২. মেকি শব্দের অর্থ কী?
ক. সত্য
খ. অহংকার
গ. বৈষম্য
ঘ. কপট।
১৩. নজরুলের মতে কোন ধর্ম সবচেয়ে বড়ো ধর্ম? (আরও দেখুন)
ক. বৌদ্ধধর্ম
খ. মানুষধর্ম
গ. জৈনধর্ম
ঘ. সনাতনধর্ম
১৪. কাকে বিদ্রোহী কবি বলা হয়?
ক. কাজী নজরুল ইসলাম
খ. জসীম উদ্দীন
গ. শওকত উসমান
ঘ. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আশাকরি “আমার পথ প্রবন্ধের মূলভাব-ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ-শব্দার্থ-বহুনির্বাচনি। এইচএসসি। বাংলা প্রথম।।” আর্টিকেলটি তোমাদের ভালো লেগেছে। আমাদের কোনো আপডেট মিস না করতে ফলো করতে পারেন আমাদের ফেসবুক–পেইজ–লিংকডিন।
আরও দেখুন:মানুষ কবিতার মূলভাব ও ব্যাখ্যা
আরও দেখুন:সেইদিন এই মাঠ কবিতার ব্যাখ্যা
আরও দেখুন:কপোতাক্ষনদ কবিতার ব্যাখ্যা
আরও দেখুন:সমাসের সহজ ব্যাখ্যা
আরও দেখুন: আনন্দধারা প্রশ্নোত্তর – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ১ম অধ্যায়
আরও দেখুন: শীত-প্রকৃতির রূপ সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ২য় অধ্যায়
আরও দেখুন: পলাশের রঙে রঙিন ভাষা সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৩য় অধ্যায়
আরও দেখুন: স্বাধীনতা তুমি সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৪র্থ অধ্যায়
আরও দেখুন: নব আনন্দে জাগো সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৫ম অধ্যায়
আরও দেখুন: আত্মার আত্মীয় সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৬ষ্ঠ অধ্যায়
আরও দেখুন: বৃষ্টি ধারায় বর্ষা আসে সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম অধ্যায়
আরও দেখুন: টুঙ্গিপাড়ার সেই ছেলেটি সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৮ম অধ্যায়
আরও দেখুন: শরৎ আসে মেঘের ভেলায় সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ৯ম অধ্যায়
আরও দেখুন: হেমন্ত রাঙা সোনা রঙে সমাধান – ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি ১০ম অধ্যায়
আরও দেখুন: বিশ্বজোড়া পাঠশালা – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ১ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: নকশা খুঁজি নকশা বুঝি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ২য় অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: মায়ের মুখের মধুর ভাষা – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৩য় অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: স্বাধীনতা আমার – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৪র্থ অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: বৈচিত্র্যে ভরা বৈশাখ – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৫ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: কাজের মাঝে শিল্প খুঁজি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৬ষ্ঠ অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: প্রাণ প্রকৃতি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৭ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: প্রাণের গান – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৮ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: চিত্রলেখা – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৯ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: শরৎ উৎসব – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ১০ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: সোনা রোদের হাসি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ১১ অধ্যায় সমাধান।