শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ১০ম অধ্যায় সমাধান: গাছের পাতায় ঝকঝকে রোদের ঝিলিক, ভরা নদীর পূর্ণতা, নদী তীরে ফুটে থাকা অজস্র কাশফুল, শিউলি আর সারা আকাশ জুড়ে তুলোর মতো শুভ্র মেঘ– এসবই জানিয়ে দেয় শরৎ এসে গেছে। তাই রৌদ্রবরণ ও শুভ্রতার প্রতীক শরৎ ঋতু। বর্ষার অবসানে তৃতীয় ঋতু শরৎ এক অপূর্ব শোভা ধারণ করে আবির্ভূত হয়।
শরৎ-এর আকাশের মতো স্বচ্ছ আকাশ অন্য ঋতুতে দেখা যায় না। এ সময় ধানের ক্ষেতে স্নিগ্ধ সবুজের শামিয়ানা দেখা যায় । বাতাসের দাপট ঢেউ তুলে যায় আমনের ক্ষেতে, শাপলা ভরা বিলে। মাঝিরা ডিঙিতে বৈঠা দিতে দিতে গায় ভাটিয়ালি গান।
শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ১০ম অধ্যায় সমাধান
শরৎ উৎসব
শরতের নীল আকাশ, শুভ্র কাশফুল আর মৃদু হাওয়া বাংলার প্রকৃতিতে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি করে। মাটিতে পড়ে থাকা সাদা শিউলি ফুল, মুক্তাদানার মতো ছড়িয়ে থাকা ঘাসের ডগায় জমা শিশির যেন শরতের আমন্ত্রণ জানায়। শরতের প্রকৃতির স্নিগ্ধতা ও কোমলতার প্রকাশ ঘটেছে বাঙালি লেখক ও কবিদের বিভিন্ন গল্প, উপন্যাস, গান, নাটক ও কবিতায়। এই রোদ, এই বৃষ্টি এ সবকিছুকেই বলা হয় শরৎ ঋতুর লক্ষণ। প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা থেকে পুরান ঢাকার ওয়ারিতে বলধা গার্ডেনে প্রথম শরৎ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
শরৎ উৎসব
পাঠ মূল্যায়ন
প্রশ্ন-১. এই রোদ, এই বৃষ্টি এটি কোন ঋতুর লক্ষণ?
উত্তর: শরৎ ঋতুর লক্ষণ।
প্রশ্ন-২. মুক্তাদানার মতো ছড়িয়ে থাকা ঘাসের ডগায় জমা শিশির কীসের আমন্ত্রণ জানায়?
উত্তর: শরৎ-এর।
প্রশ্ন-৩. বাংলার প্রথম শরৎ অনুষ্ঠান কোথায় উদযাপন হয়?
উত্তর: পুরান ঢাকায় ওয়ারীর বলধা গার্ডেনে।
প্রশ্ন-৪. কোন ঋতুতে স্নিগ্ধতা ও কোমলতার প্রকাশ ঘটে?
উত্তর: শরৎ ঋতুতে।
বুলবুল চৌধুরী
বাংলাদেশের গুণী নৃত্যপরিচালক বুলবুল চৌধুরী। তিনিই প্রথম গানের কথার অর্থ অনুযায়ী নাচের ভঙ্গি তৈরি করার প্রচলন ঘটান। বুলবুল চৌধুরীর আসল নাম রশিদ আহমেদ চৌধুরী। তার জন্ম ১৯১৯ সালে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায়। তিনি ছিলেন স্বশিক্ষিত নৃত্যশিল্পী। তবে একাধারে তিনি নাট্যকার, অভিনেতা, গীতিকার ও কবিও ছিলেন। দুই দশকেরও বেশি সময়ের কর্মজীবনে তিনি প্রায় ৭০টি নৃত্যনাট্য রচনা ও কোরিওগ্রাফ করেছেন।
তার পরিকল্পিত নৃত্য পরিকল্পনার মধ্যে আছে— ‘অজন্তা জাগরণ’, ‘মিলন ও মাথুর, ‘তিন ভবঘুরে’, ‘হাফিজের স্বপ্ন’, ‘সোহরাব রোস্তম’, ‘ব্রজ বিলাস’ ইত্যাদি। ভারত বিভাগের পর তিনি ঢাকায় স্থায়ী হন। পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছিলেন। ক্ষণজন্মা এই নৃত্যশিল্পী মাত্র ৩৫ বছর বয়সে মারা যান।
শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ১০ম অধ্যায় সমাধান
পাঠ মূল্যায়ন
প্রশ্ন-১. বাংলাদেশের কোন নৃত্যশিল্পী প্রথম গানের কথার অর্থ অনুযায়ী নাচের ভঙ্গি তৈরি করার প্রচলন ঘটান?
উত্তর: বুলবুল চৌধুরী।
প্রশ্ন-২. বুলবুল চৌধুরীর আসল নাম কী?
উত্তর: রশিদ আহমেদ চৌধুরী।
প্রশ্ন-৩. দুই দশকের বেশি সময়ের কর্মজীবনে বুলবুল চৌধুরী কয়টি নৃত্যনাট্য রচনা ও কোরিওগ্রাফ রচনা করেন?
উত্তর: প্রায় ৭০টি।
প্রশ্ন-৪. বুলবুল চৌধুরীর পরিকল্পিত একটি নৃত্য পরিকল্পনার নাম লেখো।
উত্তর: ‘তিন ভবঘুরে’।
প্রশ্ন-৫. বুলবুল চৌধুরী কত বছর বয়সে মারা যান?
উত্তর: মাত্র ৩৫ বছর বয়সে।
শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ১০ম অধ্যায় সমাধান
কাজ-১: শিল্পী বুলবুল চৌধুরীর কাজ সম্পর্কে জানা।
কাজের উদ্দেশ্য: বাংলাদেশের প্রথিতযশা নৃত্যশিল্পীর কাজ সম্পর্কে ধারণা অর্জন।
কাজের ধরন: একক কাজ।
নমুনা সমাধান: জীবনের প্রতিচ্ছবি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা, বিশেষ করে রক্ষণশীল সমাজে নাচকে জনপ্রিয় করে তোলার ক্ষেত্রে বুলবুল চৌধুরী ছিলেন এক অনন্য পথিকৃৎ। বাংলাদেশের নৃত্যচর্চায় তার অবদান অবিস্মরণীয়। শৈশবে মানিকগঞ্জে হাইস্কুলের একটি অনুষ্ঠানে স্বরচিত নৃত্যশিল্পকে ‘চতক নৃত্য’ পরিবেশনের মাধ্যমে তাঁর নৃত্যশিল্পী জীবনের সূত্রপাত ঘটে।
নাচের সাথে অভিনয় যোগ করে সুনির্দিষ্ট বক্তব্য ফুটিয়ে তোলাই ছিল তার নৃত্যনাট্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য। তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নৃত্যনাট্য হচ্ছে— ‘অজন্তা লাগরণ’, ‘মিলন ও মাথুর’, ‘তিন ‘হাফিজের স্বপ্ন’, ‘সোহরাব রোস্তম’, ‘ব্রজ বিলাস’ ইত্যাদি। নৃত্যচর্চার বাইরে তিনি অজয় কুমার ছদ্মনামে কবিতা লিখতেন।
কাজ-২: ‘শরৎ উৎসব’ পাঠ থেকে জেনে শিখন অভিজ্ঞতা লেখা।
কাজের উদ্দেশ্য: শিল্পের একটি ধারা হিসেবে নাটক অভিনয় সম্পর্কে বাস্তব ধারণা নেওয়া।
কাজের ধরন: এক কাজ।
নমুনা সমাধান: যা করলাম-
১. প্রথমে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত শরতের একটি চমৎকার নাটক সম্পর্কে জেনেছি এবং নাটকটিকে অভিনয়ের মাধ্যমে উপস্থাপন করেছি।
২. স্কুলে শরৎ উৎসবের আয়োজন করেছি এবং আয়োজনের জন্য কাশফুল, রঙিন কাগজ, তুলা ব্যবহার করে মণ্ড সাজিয়েছি।
৩. আমরা সৃজনশীল ভঙ্গিমার মাধ্যমে ধান ক্ষেত, মেঘের মত ভেসে থাকা, পাখির মতো উড়া, নৌকার মতো বেয়ে চলার ভঙ্গি করেছি।
৪. বাংলাদেশের গুণী নৃত্য পরিচালক বুলবুল চৌধুরী সম্পর্কে জেনেছি।
‘শরৎ উৎসব’ পাঠ থেকে আমি যা যা শিখলাম: বাংলাদেশের শরতের প্রকৃতি সম্পর্কে জানতে পেরেছি। প্রকৃতিতে শরৎ এলে আমাদের চারপাশে কী কী পরিবর্তন হয় তা সম্পর্কে শিখেছি। শরতে উঠানের ঘাসগুলো এবং ঘাসের ডগায় বিন্দু বিন্দু শিশির ফোঁটা, মাটিতে পড়ে থাকা শিউলি ফুল, কাশফুলের বন সবকিছুই জানান দেয় প্রকৃতিতে শরৎ এসে উপস্থিত হয়েছে।
আরও শিখেছি কীভাবে প্রকৃতি ও প্রকৃতিতে থাকা বিভিন্ন উপাদান থেকে বিভিন্ন ভঙ্গি শেখা যায় । নদী থেকে ঢেউয়ের ভঙ্গি, নৌকা বেয়ে চলার, মেঘের মতো ভেসে থাকার ভঙ্গিও শিখেছি এই অধ্যায় থেকে। তাছাড়া শরৎকাল সম্পর্কিত নাটক, গান সম্পর্কেও জানতে পেরেছি।
আরও দেখুন: বিশ্বজোড়া পাঠশালা – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ১ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: নকশা খুঁজি নকশা বুঝি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ২য় অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: মায়ের মুখের মধুর ভাষা – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৩য় অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: স্বাধীনতা আমার – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৪র্থ অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: বৈচিত্র্যে ভরা বৈশাখ – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৫ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: কাজের মাঝে শিল্প খুঁজি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৬ষ্ঠ অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: প্রাণ প্রকৃতি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৭ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: প্রাণের গান – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৮ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: চিত্রলেখা – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৯ম অধ্যায় সমাধান
আশাকরি “শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ১০ম অধ্যায় সমাধান” আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। ফেসবুক ও ইউটিউবে আমরা লাইভ ক্লাস ও নান সাজেশন শেয়ার করি। আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে ফলো করতে পারেন আমাদের ফেসবুক–পেইজ–লিংকডিন এবং সাবক্রাইব করতে পারেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।