চিত্রলেখা – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৯ম অধ্যায় সমাধান

শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৯ম অধ্যায় সমাধান: তোমরা লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির আঁকা বিখ্যাত ছবি ‘মোনালিসা’-র নাম শুনেছো? তার মুখের স্মিত হাসি আমাদের সামনে আলো ও ছায়ার একটি গোলকধাঁধা সৃষ্টি করে। এই গোলকধাঁধা সৃষ্টি করতে দ্য ভিঞ্চি বিভিন্ন ধরনের রঙের ব্যবহার করেছিলেন। যদিও তিনি ছবিটি শেষ করে রেখে যেতে পারেননি। এই ছবিটি এখনকার সময়ের সবচেয়ে ব্যয়বহুল চিত্রকর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়। যদি কখনো সুযোগ পাও, তাহলে ফ্রান্সে বেড়াতে গেলে ‘মোনালিসা’-কে দেখে এসো।


   শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৯ম অধ্যায় সমাধান

চিত্রলেখা

‘চিত্রলেখা’ অধ্যায়টিতে আমরা যেই গল্পটি পড়ব তা লীলা মজুমদারের লেখা। ‘আমি’ গল্পটিতে ছোট একটি ছেলে লাঠির আগায় পুঁটলি বেঁধে ছোটুকার কুকুর পুকিকে নিয়ে রামধনুর খোঁজে বের হয়েছে। তার মতে, রামধনুর গোড়ার খুঁটিতে এক ঘড়া সোনা পোঁতা থাকে। সে সেই সোনা বেঁচে একটা এক-শিংওয়ালা ঘোড়া কিনতে চায় এবং সেই ঘোড়ায় চেপে দিদিমার কাছে ফিরে যেতে চায়।

দিদিনা তাকে অনেক ভালোবাসে এবং সে যা মনের ইচ্ছা সব করতে পারে দিদিমার সাথে থাকলে। দিদিমা তাকে নারকেলের নাড়ু বানিয়ে দেয়, আপেল কিনে দেয়, রাত জাগতে দেয়, পড়তেও বলে না। সে তার পছন্দমতো কাজগুলো করতে পারে বলে এক-শিংওয়ালা ঘোড়া কিনে সে কেবল দিদিমার কাছে যেতে চায়।

 

       চিত্রলেখা

পাঠ মূল্যায়ন

প্রশ্ন-১. ‘আমি’ গল্পের লেখক কে?
উত্তর: লীলা মজুমদার।

প্রশ্ন- ২. ছোট ছেলেটির ছোটুকার কুকুরের নাম কী?
উত্তর: পুকি।

প্রশ্ন-৩. ছেলেটি কীসের খোঁজে যাচ্ছে?
উত্তর: রামধনুর।

প্রশ্ন-৪. সোনা দিয়ে ছেলেটি কী করবে?
উত্তর: সোনা দিয়ে ছেলেটি এক-শিংওয়ালা ঘোড়া কিনবে।

মুনির চৌধুরী

মুনির চৌধুরী ছিলেন একাধারে শিক্ষক, নাট্যকার, সুবক্তা, বাংলা কিবোর্ডের প্রবর্তক, ভাষা আন্দোলনের কর্মী এবং সর্বোপরি আমাদের শহিদ বুদ্ধিজীবীদের একজন। জেলে থেকে বাংলায় এমএ পরীক্ষা দিয়ে তিনি প্রথম হন। তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ভাষা আন্দোলনের জন্য কারাবাসের সময় তিনি তার ‘কবর’ নাটকটি রচনা করেন। নাটকটি প্রথম কারাগারেই মান্য হয়।

মুনির চৌধুরী ১৯৭১ সালের প্রথমদিকে অসহযোগ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন এবং সাংস্কৃতিক দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করে যান। এর প্রেক্ষিতে পাকিস্তান সরকারের দেওয়া ‘সিতারা-ই-ইমতিয়াজ’ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেন। প্রতীকী নাটক হিসেবে তাঁর রচিত ‘কবর’ নাটকটি বিখ্যাত। মুনির চৌধুরীর রচিত কিছু উল্লেখযোগ্য নাটক হলো— রক্তাক্ত প্রান্তর, চিঠি, দণ্ডকারণ্য, রাজার জন্মদিন, নষ্ট ছেলে ইত্যাদি। ১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর মুনির চৌধুরীকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের বাঙালি সহযোগী আল-বদর, আল-শামস বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় এবং হত্যা করে।

পাঠ মূল্যায়ন

প্রশ্ন-১. মুনির চৌধুরী কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
উত্তর: হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়।

প্রশ্ন-২. মুনির চৌধুরীর বিখ্যাত প্রতীকী নাটকের নাম কী?
উত্তর: ‘কবর’।

প্রশ্ন-৩. মুনির চৌধুরী কোন নাটকটি কারাবাসের সময় রচনা করেন?
উত্তর: ‘কবর’।

প্রশ্ন-৪. মুনির চৌধুরী ১৯৭১ সালের প্রথম দিকে কোন আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন?
উত্তর: অসহযোগ আন্দোলনে।

প্রশ্ন-৫. কে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক দেওয়া “সিতারা-ই-ইমতিয়াজ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেন।
উত্তর: মুনির চৌধুরী।

প্রশ্ন-৬. কারা মুনির চৌধুরীকে হত্যা করে?
উত্তর: পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তাদের বাঙালি সহযোগীরা।


শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৯ম অধ্যায় সমাধান

কাল-১: চিত্রলেখা অধ্যায়ের ‘আমি’ গল্পটি নিয়ে নিজের অনুভূতি ও প্রশ্ন বন্ধুখাতায় লেখা।

কাজের উদ্দেশ্য: ‘আমি’ গল্পটি সম্পর্কিত অনুভূতি প্রকাশ।
কাজের ধরন: একর।

নমুনা সমাধান – গল্পটির বিষয়ে আমার অনুভূতি: ‘আমি’ গল্পটিতে একটি ছোট ছেলে কাঁধে লাঠিতে পুঁটলি বেধে রামধনু খুঁজতে বের হয়েছে। তার মতে, রামধনুর গোড়ার খুঁটিতে এক ঘড়া সোনা পোতা থাকে, যা বেচে সে এক শিংওয়ালা ঘোড়া কিনবে। সেই ঘোড়ায় চড়ে সে দিদিমার কাছে ফেরত যাবে। দিদিমা তার অনেক পছন্দের মানুষ কারণ ছেলেটি দিদিমার সাথে থাকলে যা ইচ্ছা করার স্বাধীনতা পায়। দিদিমা তাকে দারুণ ভালোবাসে। তার জন্য নারিকেলের নাড়ু বানায়, ঘুড়ি কেনে, আপেল কেনে, রাত জাগতে দেয়, পড়তে বলে না।

সে বাসায় থাকতে চায় না কারণ তার ধারণা বাসায় তাকে সবাই বকে, বাসায় থাকলে সে যা খুশি তা করতে পারে না। তাই সে এক-শিংওয়ালা ঘোড়ায় চেপে দিদিমার কাছে ফেরত যেতে চায়। গল্পটি পড়ে আমি বুঝতে পারলাম, সবাই নিজের মনমতো চলতে চায়। চায় নিজের স্বাধীনতা। আর এ স্বাধীনতা সে যেখানে সবচেয়ে বেশি পায় সেখানেই বারবার ফিরে যেতে চায়। যদিও যা ইচ্ছা তা করার স্বাধীনতা সবসময় ডালোকিছু বয়ে আনে না। তারপরও মানুষ অধিকাংশ সময় নিজের মনমতো চলতে চায়। ‘আমি’ গল্পেও ছেলেটির কর্মকাণ্ড সেটাই প্রমাণ হয়।

গল্পটির বিষয়ে আমার মনে জাগা প্রশ্ন: ‘আমি’ গল্পটি পড়ে আমার মনে কিছু প্রশ্ন জেগেছে। যেমন-
১. ছেলেটি বাসার সবাইকে ফাঁকি দিয়ে কীভাবে বের হলো?
২. নিজের মনমতো সবকিছু করা কি সবসময় ভালো কাজ?
৩. দিদিমা কেন ছেলেটির কোনো কাজে বাধা দেন না?
৪. ছেলেটির বাবা-মা বলে যে, দিদিমা ছেলেটির মাথা চিবিয়ে খেয়েছে। এটা কীভাবে সম্ভব?
৫. ছেলেটি কীভাবে জানল যে, রামধনুর গোড়ায় স্বর্ণ পোতা থাকে?

কাজ-৩: শহিদ মুনির চৌধুরীর সৃষ্টিকর্ম সম্পর্কে আরও জানার চেষ্টা করা।

কাজের উদ্দেশ্য: শহিদ মুনির চৌধুরীর সৃষ্টিকর্ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা।
কাজের ধরন: একক।

নমুনা সমাধান: শহিদ মুনির চৌধুরী ছিলেন একাধারে শিক্ষক, নাট্যকার, সুবক্তা, বাংলা টাইপ রাইটারের কি-বোর্ডের প্রবর্তক, ভাষা আন্দোলনের কর্মী এবং শহিদ বুদ্ধিজীবীদের একজন। তিনি ১৯৫৩ সালে কারাবন্দি অবস্থায় ‘কবর’ নাটকটি রচনা করেন। তাঁর বিখ্যাত কিছু সৃষ্টিকর্ম হলো— নাটক: রক্তাক্ত প্রান্তর, চিঠি, কবর, দণ্ডকারণ্য, পলাশী ব্যারাক ও অন্যান্য, মানুষ, নষ্ট ছেলে, রাডার, জন্মদিন ইত্যাদি। অনুবাদ নাটক: কেউ কিছু বলতে পারে না, রূপার কৌটা, মুখরা রমণী বশীকরণ ইত্যাদি।

কাজ-৪: চিত্রলেখা সম্পর্কে লেখা।

কাজের উদ্দেশ্যে: গল্পের মাধ্যমে ছবি দিয়ে অলংকরণ সম্পর্কে ধারণা লাভ করা।
কাজের ধরন: একক।

নমুনা সমাধান: ‘চিত্রলেখা’ পাঠটিতে আমরা ছবি আঁকার মাধ্যমে একটি গল্পকে কীভাবে ফুটিয়ে তুলতে হয় তা সম্পর্কে জেনেছি। পাঠের শুরুতেই লীলা মজুমদারের লেখা ‘আমি’ গল্পটিকে আমরা ছবির মাধ্যমে তুলে ধরেছি। এই পাঠে মূলত গল্পের বিষয়কে ভেবে তার সাথে মিলিয়ে ছবি আঁকা সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে। চিত্রলেখা’ পাঠের নামের মধ্যেই ‘চিত্র’ ও ‘লেখা’ উপস্থিত, যা দিয়ে লেখাকে চিত্রের মাধ্যমে জীবন্ত করাই বোঝাচ্ছে।

পাঠে উপস্থিত ‘আমি’ গল্পটির মাধ্যমে লেখক আমাদের চিন্তার বিশালতাকে তুলে ধরেছেন। প্রশ্ন করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। পাঠের শেষে ‘আমরা জেনেছি মুনির চৌধুরী সম্পর্কে যিনি ছিলেন একাধারে শিক্ষক, নাট্যকার, সুবক্তা, বাংলা টাইপ রাইটারের কি-বোর্ডের প্রবর্তক। এই গুণী নাট্যকার ১৪ই ডিসেম্বরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের নির্মম শিকার হন। তাঁর বিখ্যাত প্রতীকী নাটক ‘কবর’।


আরও দেখুন: বিশ্বজোড়া পাঠশালা – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ১ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: নকশা খুঁজি নকশা বুঝি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ২য় অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: মায়ের মুখের মধুর ভাষা – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৩য় অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: স্বাধীনতা আমার – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৪র্থ অধ্যায় সমাধান

আরও দেখুন: বৈচিত্র্যে ভরা বৈশাখ – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৫ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: কাজের মাঝে শিল্প খুঁজি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৬ষ্ঠ অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: প্রাণ প্রকৃতি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৭ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: প্রাণের গান – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৮ম অধ্যায় সমাধান


আশাকরি “শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৯ম অধ্যায় সমাধান” আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। ফেসবুক ও ইউটিউবে আমরা লাইভ ক্লাস ও নান সাজেশন শেয়ার করি। আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে ফলো করতে পারেন আমাদের ফেসবুকপেইজলিংকডিন এবং সাবক্রাইব করতে পারেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top