প্রাণের গান – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৮ম অধ্যায় সমাধান

শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৮ম অধ্যায় সমাধান: বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও খেলাধুলায় নদ- নদীর উপস্থিতি প্রবল। আর ‘নৌকাবাইচ’ এদেশের লোকালয় ও সংস্কৃতির এক সমৃদ্ধ ফসল। ‘বাইচ’ শব্দটি ফারসি যার অর্থ ‘বাজি’ বা ‘খেলা’। নৌকার দাঁড় টানার কসরত ও নৌকা চালনার কৌশল দ্বারা জয় লাভের উদ্দেশ্যে ‘নৌকাবাইচ’ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ঢোল- করতাল নিয়ে বাদক আর গায়েনরা নৌকায় বসে সমবেত কণ্ঠে সারিগান গেয়ে তালে তালে মাঝিদের উৎসাহ ও শক্তি যোগান।


  শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৮ম অধ্যায় সমাধান

সংস্কৃতি

প্রাকৃতিক পরিবেশ ও ভৌগোলিক অবস্থার কারণে ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। এক একটি বিশেষ অঞ্চলের নিজস্ব ভাষা, খাদ্যাভ্যাস, আচার-অনুষ্ঠানে নিজস্বতা রয়েছে। আঞ্চলিক পরিচয় বহনকারী সব বৈশিষ্ট্যের সমষ্টি বা ধরনই হলো সংস্কৃতি বা আঞ্চলিক সংস্কৃতি। তাই বলা যায়, আঞ্চলিক সংস্কৃতি হলো অঞ্চলভিত্তিক সংস্কৃতি বা জীবনধারা।

 

প্রাণের গান

পাঠ মূল্যায়ন

প্রশ্ন-১. ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখা যায় কেন?
উত্তর: প্রাকৃতিক পরিবেশ ও ভৌগোলিক অবস্থার কারণে।

প্রশ্ন-২. সংস্কৃতি কী?
উত্তর: আঞ্চলিক পরিচয় বহনকারী সব বৈশিষ্ট্যের সমষ্টি বা ধরন।

প্রশ্ন-৩. আঞ্চলিক সংস্কৃতি কী?
উত্তর: অঞ্চলভিত্তিক।

ভাটিয়ালি গান

বাংলা লোকসংগীতের একটি অন্যতম ধারা হলো ভাটি অঞ্চলের ‘ভাটিয়ালি গান’। নদীবিধৌত বাংলার মানুষের প্রাণের এ গান নৌকা, মাঝি ও গুন সম্পর্কিত। এ গানে মাঝি-মল্লা, মেহনতি মানুষের সুখ-দুঃখ, আবেগ, আশা-আকাঙ্ক্ষা নিবিড়ভাবে ফুটে উঠে। ভাটিয়ালি গানের বৈশিষ্ট্য হলো এটি তাল-নির্ভর নয়। বাংলার সহজ-সরল মানুষের আবেগের সুরে গাওয়া এই গান আমাদের সংস্কৃতিকে ধারণ করে।

 

শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৮ম অধ্যায় সমাধান

পাঠ মূল্যায়ন

প্রশ্ন-১. ভাটিয়ালি গান কীসের অংশ?
উত্তর: বাংলা লোকসংগীতের।

প্রশ্ন-২. কোন গান নৌকা, মাঝি ও গুণ সম্পর্কিত গান?
উত্তর: ভাটিয়ালি গান।

প্রশ্ন-৩. ভাটিয়ালি গানের বৈশিষ্ট্য কোনটি?
উত্তর: এটি তাল নির্ভর নয়।

কাহারবা তাল

কাহারবা ৮ মাত্রার একটি সমপদী তাল। এই তালে রয়েছে দুটি ভাগ, প্রতিটি ভাগে রয়েছে ৪টি করে মাত্রা। আমরা ১,২,৩,৪ । ১,২,৩,৪ গুনে অথবা ১,২,৩,৪। ৫,৬,৭,৮ গুনে কাহারবা তালের মাত্রা ৪। ৪ ছন্দ প্রকাশ করতে পারি। প্রথম মাত্রায় তালি দিয়ে ১,২,৩,৪ এবং পঞ্চম মাত্রায় খালি বা ফাঁকা (তালি না দিয়ে) ৫,৬,৭,৮ গুনব। প্রথম মাত্রায় বা তালিতে ‘সোম’ এবং পঞ্চম মাত্রায় ফাঁক বা খালি।

 

শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৮ম অধ্যায় সমাধান

পাঠ মূল্যায়ন

প্রশ্ন-১. কাহারবা তাল কয় মাত্রার?
উত্তর: ৮ মাত্রার।

প্রশ্ন-২. কাহারবা কোন ধরনের তাল?
উত্তর: সমপদী তাল।

প্রশ্ন-৩. কাহারবা তালে কয়টি ভাগ রয়েছে?
উত্তর: দুটি ভাগ।

প্রশ্ন-৪ কাহারবা তালের প্রতিটি ভাগে কয়টি করে মাত্রা রয়েছে?
উত্তর: ৪টি।

সারিভঙ্গি

দলগতভাবে একই ভঙ্গি করাটাই হলো সারিডঙ্গি। সাধারণত কোনো কাজ যখন আমরা দলগতভাবে করি তখন যে দেহভঙ্গিটা দেখতে পাই, সেটাই সারিডঙ্গি। যেমন: নৌকাবাইচ, ছাদ পেটানো, কোনো ভারি জিনিস উপরে তোলার সময় যে শারীরিক ভঙ্গি হয় ইত্যাদি। অর্থাৎ এর সাথে শ্রমের একটা যোগসূত্র আছে। এক কথায় দলগত শ্রমভঙ্গি হলো সারিডঙ্গি।

 

শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৮ম অধ্যায় সমাধান

পাঠ মূল্যায়ন

প্রশ্ন-১. সারিডলি কী?
উত্তর: দলগত শ্রমভঙ্গি।

প্রশ্ন-২. নৌকাবাইচ-এর সময় কোন গান গাওয়া হয়?
উত্তর: সারিগান।

প্রশ্ন-৩. কীসের সাথে শ্রমের যোগসূত্র আছে?
উত্তর: সারিভঙ্গি।

শিল্পী আব্বাসউদ্দিন আহমেদ

আব্বাসউদ্দিন আহমেদ ছিলেন একজন বাঙালি লোকসংগীত শিল্পী, সংগীত পরিচালক ও সুরকার। ১৯০১ সালে ব্রিটিশ ভারতের কোচবিহার জেলায় তার জন্ম। রক্ষণশীল বাঙালি মুসলিম সমাজে সংগীতকে গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় করে তোলার ক্ষেত্রে তার অবদান অপরিসীম। তিনি বিভিন্ন ধরনের গান করেছেন যেমন— ভাওয়াইয়া, জারি, সারি, ভাটিয়ালি, মুর্শিদি, বিচ্ছেদী, দেহতত্ত্ব, পালাগান, লোকগীতি, আধুনিক গান, এবং দেশাত্মবোধক গান।

কিন্তু আব্বাসউদ্দিন আহমেদ খ্যাতি লাভ করেন মূলত লোকগানের গায়ক হিসেবে। সংগীতে তার অবদানের জন্য এই শিল্পী প্রাইড অফ পারফরম্যান্স, শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার এবং স্বাধীনতা পুরস্কারসহ আরও অনেক মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার লাভ করেন।

 

শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৮ম অধ্যায় সমাধান
পাঠ মূল্যায়ন

প্রশ্ন-১. আব্বাসউদ্দিন আহমেদ কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: ১৯০১ সালে।

প্রশ্ন-২. আব্বাসউদ্দিন আহমেদ কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: ব্রিটিশ ভারতের কোচবিহার জেলায়।

প্রশ্ন-৩. কে লোকগানের গায়ক হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন?
উত্তর: আব্বাসউদ্দিন আহমেদ।

প্রশ্ন-৪. কে রক্ষণশীল বাঙালি মুসলিম সমাজে সংগীতকে গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় করে তোলেন?
উত্তর: আব্বাসউদ্দিন আহমেদ।

প্রশ্ন-৫. সংগীতে অবদানের জন্য আব্বাসউদ্দিন আহমেদ কী কী পুরস্কার লাভ করেন?
উত্তর: প্রাইড অফ পারফরম্যান্স, শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, স্বাধীনতা পুরস্কারসহ আরও অনেক মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার।


শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৮ম অধ্যায় সমাধান

কাজ-৩: শিল্পী আব্বাসউদ্দিন আহমেদের শিল্প সম্পর্কে আরও জানার চেষ্টা করা।

কাজের উদ্দেশ্য: শিল্পী আব্বাসউদ্দিন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবে।
কাজের ধরন: একক।

নমুনা সমাধান: শিল্পী আব্বাসউদ্দিন আহমেদ ছিলেন বাঙালি লোকসংগীত শিল্পী, সংগীত পরিচালক ও সুরকার। গ্রাম বাংলার মানুষের প্রাণের সুর ভাওয়াইয়া, পল্লীগান তিনিই প্রথম গ্রামোফোন রেকর্ডের মাধ্যমে আমাদের কাছে উপস্থাপন করেছেন।

পাশাপাশি ইসলামি সংগীত ও গজল পরিবেশন করে মুসলিম সমাজকে তিনি জাগরণের প্রেরণা দিয়েছেন। এছাড়া তিনি ভাওয়াইয়া, সারি, জারি, ভাটিয়ালি, মুর্শিদি, বিচ্ছেদী, দেহতত্ত্ব, পালাগান, লোকগীতি, আধুনিক গান ও দেশাত্মবোধক নানা ধরনের গান গেয়েছেন। ‘ওকি গাড়িয়াল ভাই’, ‘নাও ছাড়িয়া দে’, ‘নদীর কূল নাই’, ‘মাঝি বাইয়া যাও’ ইত্যাদি তাঁর বিখ্যাত লোকগীতি।

কাজ-৪: ‘প্রাণের গান’ পাঠে যা যা শিখেছি তা সম্পর্কে লেখা।

কাজের উদ্দেশ্য: পাঠ থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা লিখতে পারা।
কাজের ধরন: একক।

নমুনা সমাধান: বাংলাদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও ভৌগোলিক অবস্থার কারণে এখানে ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। মানুষের জীবনযাপন, মূল্যবোধ, বিশ্বাস, ভাষা, যোগাযোগ এবং আচার-আচরণ মিলেই তার সংস্কৃতি। এ পাঠ থেকে বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিতে বিদ্যমান ভাটিয়ালি গান, সারি গান, সারিভঙ্গি সম্পর্কে জেনেছি। আরও জেনেছি কাহারবা তাল সম্পর্কে।

ডাটিয়ালি গানের বৈশিষ্ট্যগুলো সম্পর্কে শিখেছি এবং কোনটি ভাটিয়ালি গানের অন্তর্ভুক্ত তা চিহ্নিত করতে পেরেছি। এছাড়া সারি গানগুলোকে শ্রম বা কর্মসংগীত কেন বলা হয় তা জেনেছি। এই পাঠের মাধ্যমে আমার নিজ অঞ্চলে প্রচলিত লোকগীতিগুলো সম্পর্কে ধারণা পেয়েছি ‘ এবং লোকগীতিগুলো গাইতে পেরেছি। আরও জেনেছি বিখ্যাত শিল্পী আব্বাসউদ্দিন ও তার শিল্প সম্পর্কে।


আরও দেখুন: বিশ্বজোড়া পাঠশালা – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ১ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: নকশা খুঁজি নকশা বুঝি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ২য় অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: মায়ের মুখের মধুর ভাষা – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৩য় অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: স্বাধীনতা আমার – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৪র্থ অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: বৈচিত্র্যে ভরা বৈশাখ – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৫ম অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: কাজের মাঝে শিল্প খুঁজি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৬ষ্ঠ অধ্যায় সমাধান
আরও দেখুন: প্রাণ প্রকৃতি – শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৭ম অধ্যায় সমাধান


আশাকরি “শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি ৮ম অধ্যায় সমাধান” আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। ফেসবুক ও ইউটিউবে আমরা লাইভ ক্লাস ও নান সাজেশন শেয়ার করি। আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে ফলো করতে পারেন আমাদের ফেসবুকপেইজলিংকডিন এবং সাবক্রাইব করতে পারেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top